সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশের অভিযোগে বাংলাদেশি ২২ মেরিন ইঞ্জিনিয়ারকে ঢাকায় ফেরত পাঠিয়েছে দেশটির ইমিগ্রেশন পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে বিশেষ চাটার্ড বিমানে তাদের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাঠিয়ে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর কথা বলে প্রায় দেড় বছর আগে একটি দালালচক্র এসব নাগরিকের কাছ থেকে জনপ্রতি ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা করে হাতিয়ে নেয়। ওই চক্রের পরামর্শমতো বিভিন্ন দেশ ঘুরে মেক্সিকোয় পৌঁছান তারা। এরপর ম্যাক্সিকোর সীমান্ত পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে সেখানকার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। এক বছর কারাভোগের পর বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে আলোচনা করে বিশেষ একটি বিমানে তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পাসপোর্ট না থাকায় আউটপাসের মাধ্যমে তাদের পাঠানো হয়।
সূত্র জানায়, ২২ বাংলাদেশির মধ্যে কামাল ভূঁইয়া, জাফর আহমেদ, জায়েদ হোসেন, মমিনুল ইসলাম, শফিক আহমেদের নাম জানা গেছে। অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো দালাল সিন্ডিকেটের নাম প্রকাশ করেছেন এসব বাংলাদেশি। কামাল, মানিক ও জাফর এসব মেরিন ইঞ্জিনিয়ারকে উচ্চ বেতনে চাকরি দেওয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বাংলাদেশিসহ তৃতীয় বিশ্বের প্রায় অনেক দেশের নাগরিকদের ট্যুরিজম ভিসা বা প্রোগ্রামের নামে মেক্সিকো সীমান্ত পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ঘটনা নতুন কিছু নয়; কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে সহনশীল অভিবাসননীতির কারণে এক পর্যায়ে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী এসব ব্যক্তির বসবাস দীর্ঘায়িত হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা রাজনৈতিক আশ্রয়সহ নানা উপায়ে নাগরিকত্বও পান। আবার অভিবাসন অপরাধের মামলায় আপিল করে বছরের পর বছর বসবাসেরও সুযোগ পান।
এজন্য যুক্তরাষ্ট্রকে বলা হয়ে থাকে অবৈধ অভিবাসনকারীর স্বর্গভূমি। কয়েক লাখ বাংলাদেশি সে দেশে অবৈধভাবে বসবাসও করছে; কিন্তু হঠাৎ করে ২২ মেরিন ইঞ্জিনিয়ারকে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর নীতিমালার বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা।
শাহজালাল বিমানবন্দরের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কের সহকারী পরিচালক তানভীর আহমেদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে আলোচনা করে এ নাগরিকদের যথাযথভাবে হস্তান্তর করেছে। তিনি জানান, এই দলে ২৪ জনকে পাঠানোর কথা ছিল। দুজন গুরুতর অসুস্থ থাকায় তাদের পরে পাঠানো হবে।
সৌজন্যে: আমাদের সময়