কর্মীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ৭৫ লাখ ডলার (৮২০ কোটি উওন) কর ফাঁকির এক মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে নাম উঠে এসেছে দক্ষিণ কোরিয়ার কনগ্লোমারেট স্যামসাং ইলেকট্রনিকসের অসুস্থ চেয়ারম্যান ই গন হি’র। গতকাল দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশ ই গন হি’র নাম প্রকাশ করেছে। খবর রয়টার্স।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় একের পর এক কেলেঙ্কারি দক্ষিণ কোরিয়ার বৃহৎ ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য স্যামসাং পরিবারকে বড় ধাক্কা দিয়েছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতেই চেয়ারম্যান ই গন হি’র ছেলে ও স্যামসাং গ্রুপের উত্তরাধিকারী দুর্নীতি কেলেঙ্কারির দায়ে আটক ই জে ইয়ং মুক্তি পেয়েছেন। সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার আপিল আদালত দেশের সাবেক প্রেসিডেন্টকে ঘুষ প্রদান ও দুর্নীতির দায়ে ই জে ইয়ংকে দেয়া কারাদণ্ডের মেয়াদ কমিয়ে আড়াই বছর করেছেন এবং চার বছরের জন্য এ দণ্ড মুলতবির নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে ২০১৪ সালে হূদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে ৭৬ বছর বয়সী জ্যেষ্ঠ ই সিউলে স্যামসাং মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি রয়েছেন। তার অবস্থা উন্নতির তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না এবং তার সঙ্গে যোগাযোগ করাও অত্যন্ত কঠিন। কারাদণ্ড পাওয়ার আগ পর্যন্ত স্যামসাং গ্রুপের ডি ফ্যাক্টো প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ই জে ইয়ং।
সন্দেহাভাজন হিসেবে নাম এলেও শারীরিক অবস্থার কারণে জ্যেষ্ঠ ইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হবে না বলে পুলিশ জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে কোরিয়ান ন্যাশনাল পুলিশ এজেন্সি জানায়, স্যামসাং চেয়ারম্যান ই গন হি ও স্যামসাংয়ের এক নির্বাহী কোম্পানির ৭২ জন নির্বাহীর নামে থাকা ২৬০টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তহবিল পরিচালনা করেছেন। এসব ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে তারা ৭৫ লাখ ডলার কর ফাঁকি দিয়েছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। পুলিশ এ মুহূর্তে মামলাটি প্রসিকিউটরদের কাছে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। অন্যদিকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে স্যামসাং।
পুলিশ আরো জানায়, ব্যাংক হিসাবগুলোয় প্রায় ৩৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার (৪০ হাজার কোটি উওন) ছিল। ইর পারিবারিক বাসভবন সংস্কারের জন্য এসব হিসাব থেকে অবৈধভাবে অর্থ পরিশোধ করার তথ্য পাওয়া গেছে। কর ফাঁকির এ তদন্ত ২০১১ সালে দেরিতে পরিশোধিত ১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার (১৩ হাজার কোটি উওন) করের সঙ্গে জড়িত।
গত বছর দুর্নীতি মামলায় ই জা-য়ুংকে গ্রেফতারের পর স্যামসাং করপোরেট ব্যবস্থার স্বচ্ছতা উন্নয়নে প্রত্যয় ব্যক্ত করে। ২০১৭ সালের শেষ দিকে গ্রুপের করপোরেট স্ট্র্যাটেজি কার্যালয় বিলুপ্ত করেছে।
এর আগেও স্যামসাং চেয়ারম্যান ইর বিরুদ্ধে কর ফাঁকিসংক্রান্ত তদন্ত চালানো হয়েছে। ২০০৯ সালে তাকে এ ধরনের একটি অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। পরে অবশ্য তাকে সে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।