দক্ষিণ কোরিয়ায় আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় শীতকালীন অলিম্পিকে অংশগ্রহণের জন্য ২০০ সদস্যের একটি খেলোয়াড়দল পাঠাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। দুই কোরিয়ার মধ্যে বিবদমান উত্তেজনার মধ্যেই উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সপ্তাহব্যাপী এ-বিষয়ক আলোচনা চলাকালে বুধবার দক্ষিণ কোরিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
প্রায় দুই বছর পর উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সরাসরি আলোচনা হচ্ছে। এই সুযোগে তাদের মধ্যে কয়েক মাস ধরে চলা সামরিক উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কিছুটা প্রশমিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে উত্তর কোরিয়া পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রম অব্যাহত রাখায় সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।
এদিকে, কানাডার ভ্যাঙ্কুভার শহরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে অংশগ্রহণকারী ২০ দেশ মঙ্গলবার এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, পরমাণু অস্ত্র মুক্ত করতে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার চাপ আরো বাড়াতে হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র হুঁশিয়ারি করে বলেছে, পরমাণু কার্যক্রম অব্যাহত রাখলে উত্তর কোরিয়াকে সামরিক জবাব দেওয়া হবে।
১৯৫০-১৯৫৩ সালে কোরীয় যুদ্ধে দক্ষিণ কোরিয়াকে সমর্থনকারী ২০ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের এই বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেন, উত্তর কোরিয়া যদি আলোচনার পথে না আসে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সামরিক জবাব দেবে যুক্তরাষ্ট্র।
জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো কোনো বৈঠকে বলেন, উত্তর কোরিয়ার ‘পুলকে আক্রমণ’ নিয়ে বিশ্বের সাদামাটা চিন্তা করলে চলবে না। তিনি বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে চাপ কমানো বা তাদের পুরস্কৃত করার সময় নয় এটি।’ তারো কোনো দাবি করেন, ‘ঘটনা হলো উত্তর কোরিয়া আলোচনায় বসছে, এর অর্থ দাঁড়ায় নিষেধাজ্ঞায় কাজ হচ্ছে।’
২০১৭ সালে পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রসহ বেশ কিছু আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির দাবি, পুরো যুক্তরাষ্ট্রের তাদের ক্ষেপণাস্ত্র পাল্লার আওতায় চলে এসেছে। গুয়াম ঘাঁটিতে হামলারও হুমকি দেয় তারা। জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পরমাণু হামলা চালিয়ে উত্তর কোরিয়াকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়ার হুমকি দেন। এর পাশাপাশি কিম জং-উন ও ট্রাম্পের মধ্যে বাকযুদ্ধ বিশ্বকে উদ্বেগে ফেলেছে। তবে ২০১৮ সালের শুরুতে উত্তর কোরিয়ার নেতা জং-উনের নমনীয় বক্তব্য চলমান উত্তেজনা কিছুটা কমিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠেয় অলিম্পিকে দল পাঠানোর প্রাথমিক প্রস্তাব দেন তিনি। পরে দক্ষিণ কোরিয়া আলোচনার প্রস্তাব দেয় এবং দুই কোরিয়া আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধিদল দক্ষিণ কোরিয়ায় যাবে।