ইংল্যান্ডের করা ৩৪৬ রানের জবাব দিতে নেমে প্রথম ইনিংসে বিশাল লিডের পথে এগিয়ে চলছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। সিডনি টেস্ট এমনিতেই অস্ট্রেলিয়ার জন্য স্রেফ আনুষ্ঠানিকতার। তবে, তাই বলে ছেড়েও দেয়নি তারা। তৃতীয় দিন শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৪ উইকেট হারিয়ে ৪৭৯। লিড দাঁড়িয়েছে ১৩৩ রানের। দুই ভাই শন মার্শ এবং মিচেল মার্শের ব্যাটে বড় লিডের দিকেই হাঁটছে স্বাগতিকরা। শন মার্শ অপরাজিত ৯৮ এবং মিচেল মার্শ অপরাজিত রয়েছেন ৬৩ রানে।
ক্যামেরন বেনক্রফট যখন ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই আউট হয়ে গিয়েছিলেন স্টুয়ার্ট ব্রডের বলে, তখনই অস্ট্রেলিয়া শিবিরে আতঙ্ক দেখা দেয়ার কথা; কিন্তু ডেভিড ওয়ার্নার আর উসমান খাজা সেই আতঙ্ককে দলের মধ্যে ঝেঁকে বসতে দিলেন না। ৮৫ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক বিপর্যয় সামলে দিয়েছিলেন ওয়ার্নার। ৫৬ রান করে তিনি আউট হয়ে গেলেও ইংলিশ বোলারদের সামনে অপরপ্রান্তে রীতিমত পাহাড় হিসেবে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন উসমান খাজা।
পুরো সিরিজে দল ভালো করলেও উসমান খাজা কেন যেন ছিলেন নিষ্প্রভ। দুটি হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস খেললেও সেগুলো খুব একটা উল্লেখ করার মত নয়। এ কারণে তার ওপর একটা চাপ ছিল সিডনি টেস্টে ভালো করার। সেই চাপকেই জয় করে দেখালেন খাজা। খেললেন ১৭১ রানের বিশাল এক ইনিংস।
দ্বিতীয় দিন শেষে খাজা অপরাজিত ছিলেন ৯১ রানে। তৃতীয় দিন এসে আরও অসাধারণ হয়ে উঠলেন খাজা। ইংলিশ বোলারদের তুলোধুনো করে ক্যারিয়ারের ৬ষ্ঠ সেঞ্চুরি তো পূরণ করলেনই, সঙ্গে নিজের ইনিংসকে নিয়ে গেলেন আরও দুরে। শেষ পর্যন্ত ৩৮১ বল খেলে ১৭১ রান করে আউট হলেন তিনি। তবে, উসমান খাজার জন্য আফসোস, নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ রানকে অতিক্রম করতে পারলেন না তিনি মাত্র ৩ রানের জন্য। টেস্টে তার সর্বোচ্চ ১৭৪।
উসমান খাজা আউট হওয়ার আগে সাজঘরে ফিরেছিলেন স্টিভেন স্মিথ। রানের ধারাবাহিকতা এই টেস্টেও ধরে রেখেছিলেন অসি অধিনায়ক। চলতি অ্যাশেজ সিরিজি যেভাবে তার ব্যাট হেসেছে, তাতে সিডনির দর্শকরাও স্মিথকে একই রূপে দেখতে চেয়েছিলেন। হতাশ হননি তারা। ৮৩ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন তিনি। মঈন আলির বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে তিনি যখন আউট হন, তখন দলীয় রান ২৭৪। আউট হওয়ার আগে উসমান খাজার সঙ্গে গড়েন ১৮৮ রানের অনবদ্য এক জুটি।
দিনের শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে, দলীয় ৩৭৫ রানে আউট হন উসমান খাজা। এরপরই জুটি বাধেন দুই ভাই শন মার্শ এবং মিচেল মার্শ। দুই ভাই মিলে ১০৪ রানের জুটি গড়ে রয়েছেন অপরাজিত। উসমান খাজা আউট হওয়ার পর যারা ভেবেছিলেন, অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস আর খুব বেশি এগুবে না, তাদেরকে হতাশ করে স্বাগতিকদের বড় লিডের পথেই ধরে রাখলেন মার্শ ভাইদ্বয়। ইংল্যান্ডের হয়ে ১টি করে উইকেট নেন জেমস অ্যান্ডারসন, স্টুয়ার্ট ব্রড, মঈন আলি এবং অভিষিক্ত ম্যাসন ক্রেন।