হিমের পরশ গায়ে লাগলেই বুক দুরুদুরু। আসলে মাঘের শীত বাঘের গায়ে। শীতের রঙিন দিনে যতই খুশির পসরা সাজানো থাক না কেন, ভয়ের জায়গাও কিন্তু কম নয়। সব থেকে ভয় বোধ হয় গোসলে। আট হোক কিংবা আশি, শীতের দিন গোসলের পানিকে ভয় পান না এমন মানুষ বিরল। আর শীতকাতুরে হলে তো কথাই নেই।
তবে শীতের হাত থেকে পালাতে গোসলে ফাঁকি দেওয়ার যে প্রবণতা ছিল তা বোধহয় একেবারে অমূলক নয়। অন্তত চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা তেমনটাই বলছেন। সারা পৃথিবী জুড়েই এ ব্যাপারে একমত চিকিৎসকরা। প্রতিদিন গোসল করলে ত্বকের বেশ ক্ষতি হতে পারে। আর তাই প্রতিদিন গোসলের বিরুদ্ধেই মত তাদের। শীতকালের সকালও তার ব্যতিক্রম নয়।
কিন্তু প্রতিদিন গোসল না করলে একটা নোংরা নোংরা ভাব ঘিরে ধরে আমাদের। বিষয়টি কতটা যৌক্তিক? বোস্টনের এক চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, প্রতিদিন গোসল করাটা অনেকটাই সামাজিক নিয়ম। এর সঙ্গে নোংরা কোনো সম্পর্ক নেই। কেননা শরীরের নিজস্ব ক্রিয়াই ত্বককে নোংরা হওয়ার হাত থেকে বাঁচায়। সেটা গোসল করলেও হয়, না করলেও হয়। সুতরাং নোংরা তাড়াতে গোসলের দাওয়াই ততটা কার্যকরী নয়। অবশ্যই একেবারে গোসল না করার পক্ষে যুক্তি দেখাননি তিনি।
তবে তার মতে, প্রতিদিন গোসল করতে হবে ত্বকের জন্য অন্তত এটা খুব একটা যুক্তিযুক্ত নয়।
ঠাণ্ডার হাত থেকে বাঁচতে শীতের দিনে আমরা সাধারণত গরম পানিতে গোসল করে থাকি। তাতে শরীর আরাম পায় বটে। কিন্তু ত্বকের দফারফা। কেননা এর ফলে ত্বক শুকনো হয়ে যায় এবং স্বাভাবিক আর্দ্রতা হারায়।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, গোসলের সময় যেন এক্ষেত্রে বেশি না হয়।
প্রতিদিন গোসল না করার পক্ষে আরও একটি যুক্তি দেখাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সেটি হল ব্যাকটেরিয়ার ধ্বংস হওয়া। শরীর তার নিজের প্রয়োজনে কিছু ভাল ব্যাকটেরিয়ার জন্ম দেয়। যা টক্সিনের হাত থেকে ত্বককে বাঁচায়। কিন্তু প্রতিদিন গোসলের ফলে সেগুলোর মৃত্যু হয়। তাতে ক্ষতি হয় শরীরেরই।
এছাড়া নখেরও ক্ষতি হয়। কেননা গোসল করার সময় নখ পানি শোষণ করে। যা ধীরে ধীরে নখকে নষ্টের দিকে ঠেলে দেয়।
তাহলে শীতে গোসলের ভয় নেহাত অযৌক্তিক নয়। অন্তত বিশেষজ্ঞদের যুক্তিগুলো যে খানিকটা ঢাল হল, তা হয়তো শীতকাতুরে মাত্রই স্বীকার করবেন।