Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
quran-sculpture
জেদ্দার এই ভাস্কর্যটির আদলেই কসবায় তৈরি করা হয়েছে কুরআন ভাস্কর্য।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় স্থাপিত হলো দেশের প্রথম কুরআন ভাস্কর্য। সংখ্যাগরিষ্ট মানুষের মুল্যবোধের সাথে সংগতি রেখে বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম কসবা পৌর শহরের দর্শনীয় মোড়ে মহাগ্রন্থ আলকুরআনের আদলে স্থাপিত হলো এই ভাস্কর্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের মেধাবী ছাত্র ভাস্কর কামরুল হাসান শিপন এ ভাস্কর্যটি ডিজাইন করেছেন।

সৌদি আরবের জেদ্দা বিমানবন্দর থেকে নেমে পবিত্র নগরী মক্কার প্রবেশদ্বারে কুরআনের আদলে তৈরি যে বিশাল তোরণ রয়েছে। সে তোরণের ডিজাইনের আলোকেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলা সদরের ব্যস্ততম কদমতলা মোড়ে তৈরি করা হয়েছে এ ভাস্কর্যটি।

chardike-ad

এর আগে বাংলাদেশে আর কেউ এ রকম ভাস্কর্য নির্মাণ করেনি বলে ভাস্কর কামরুল হাসান শিপন দাবি করেন। উন্নতমানের গ্লাস ফাইভার দ্বারা তৈরি নান্দনিক ভাস্কর্যটির উচ্চতা ১৬ ফুট এবং প্রস্থ ৮ ফুট। এটি তৈরিতে প্রায় ৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ইতোমধ্যেই ভাস্কর্যটির নির্মাণকাজ প্রায় শেষের দিকে। এখন চলছে রং লাগানো ও আনুষাঙ্গিক কাজ।

কদমতলা মোড়ের নির্মিত বাংলাদেশের প্রথম কুরআনিক ভাস্কর্যটি দেখতে প্রতিদিনই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থান থেকে আগত দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন।

কসবা পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, পৌর মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েলের সার্বিক দিক নির্দেশনায় ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরের এডিবির অর্থায়নে এই প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়েছে। প্রকল্পের প্রারম্ভিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৮ হাজার ৫শ ১৬ টাকা। ১ জুন এই প্রকল্পের কাজ শুরু করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সান কমিউনিকেশন।

ব্যতিক্রমধর্মী এই ভাস্কর্য নির্মাণ সংশ্লিষ্টরা সব মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। দেশের আলেম সমাজও তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। পাশিপাশি এই ভাস্কর্যটি যেন কোনোভাবেই অবহেলিত না হয় সেদিকে লক্ষ রাখার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

এলাকাবাসীরা জানান, সংখ্যাগরিষ্ট মানুষের ঈমানের সাথে সাংঘর্ষিক মুর্তি নির্মাণ ছাড়াও যে সুন্দর শিল্প সৃষ্টি করা সম্ভব-এ ভাস্কর্যটিই এর বাস্তব উদাহরণ। এই ভাস্কর্যটি মানুষের মনে ইসলামী মুল্যবোধ সৃষ্টি করবে। পাশাপাশি অপরাধমুক্ত সমাজ গঠন এবং সুন্দর পরিবেশ নির্মাণে কসবার মুসলমানের কাছে শিল্পকর্ম অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

এছাড়াও পৌর এলাকায় এই ভাস্কর্য তৈরি করার চিন্তা করার জন্য সকলেই মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েলকে ধন্যবাদ জানান। তবে এই ভাস্কর্যটির যেন কোনোভাবেই অবহেলিত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য অনুরোধ জানান এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে কসবা পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. কামরুল হাসান জানান, পৌর এলাকায় ভাস্কর্যটির কাজ প্রায় শেষের দিকে। এটি সম্পূর্ণভাবে এডিবির অর্থায়নে করা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ৩১ তারিখের মধ্যে এর সব কাজ শেষ হবে। এটি তৈরি করতে গিয়ে যেন কোন ত্রুটি না থাকে সেই বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা সকলেই কাজ করে যাচ্ছি। ভাস্কর্যটি সম্পূর্ণ শেষ করতে প্রায় ৬ লাখ টাকা কিংবা তার চেয়ে বেশি লাগতে পারে।

কসবা পৌরসভার মেয়র মো. এমরান উদ্দিন জুয়েল জানান, আমরা মুসলমান হিসেবে আমাদের কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। সেই দায়িত্ববোধ থেকেই আমরা পৌরসভার সর্বসম্মতিক্রমে এই ভাস্কর্যটি তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এছাড়াও কসবা পৌর এলাকার বিভিন্ন জায়গায় আরো কিছু ভাস্কর্য ও ফোয়ারা নির্মাণ করা হচ্ছে।