সৌদি আরবের সংস্কারনীতির আওতায় নতুন বছরের প্রবাসীদের জন্য খরচ বাড়বে নানাখাতে, যার ফলে দেশে ফিরতে বাধ্য হতে পারেন অনেক প্রবাসী। বিদায়ী বছরেই পোষ্য ফি বাড়ানো, জাতীয়করণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিভিন্ন খাতে প্রবাসী কর্মী নিয়োগে ফি বাড়ানো, পাঁচ শতাংশ কর আরোপ ইত্যাদি কারণে দেশটিতে প্রবাসীদের সংখ্যা কমেছে।
সৌদি আরবে রয়েছেন প্রায় ২০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি। অতিরিক্ত ফি বাড়ানো এবং ভিসা সংক্রান্ত বৈধতার বাধ্যবাধকতায় অনেককেই দেশে ফিরে যেতে হবে।
সৌদি গেজেট জানিয়েছে, এ বছরের জুলাই মাসে প্রবাসী শ্রমিকদের পোষ্য ভাতা বাড়িয়ে ১০০ সৌদি রিয়াল করা হয়েছে। এই ফি বছর প্রতি পর্যায়ক্রমে ১০০ রিয়াল করে বাড়তে থাকবে। অর্থাৎ ২০১০ সালে তা ৪০০ সৌদি রিয়ালে ঠেকবে।
প্রবাসী নিয়োগ নিরুৎসাহিত করতে সৌদি অর্থমন্ত্রণালয় প্রবাসী শ্রমিকদের ওপর ধার্য করা ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছে। তাদের ঘোষণা অনুযায়ী, ব্যক্তিমালিকানাধীন যেসব প্রতিষ্ঠান স্থানীয়দের চেয়ে প্রবাসীদের বেশি নিয়োগ দেয়, তাদের ওপর আরোপিত ফি পর্যায়ক্রমিকভাবে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৮০০ রিয়াল পর্যন্ত বাড়ানো হবে।
এর প্রথমধাপ হিসেবে আসছে বছরের জানুয়ারি থেকে বেসরকারি ব্যক্তিমালাকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রত্যেক প্রবাসী শ্রমিকের জন্য ৩০০ রিয়াল এর জায়গায় ৪০০ রিয়াল করে পরিশোধ করতে হবে।
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ভিশন ২০৩০ উদ্যোগেই এই নতুন মহাপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যাতে আমূল বদলে যাচ্ছে হাজার বছরের কট্টরপন্থী, জ্বালানি তেলনির্ভর দেশ সৌদি আরব।
ভিশন ২০৩০ অনুযায়ী ২০২০ সালের মধ্যে ৯ শতাংশ হারে বেকারত্ব হার কমানো জোর পরিকল্পনা নিয়েছে সৌদি সরকার। ২০৩০ সালের মধ্যে এর হার ৭ শতাংশ পর্যন্ত কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। দেশটির সরকার আরো ঘোষণা দিয়েছে, ২০২০ সালের মধ্যে ১২ লাখ কর্মসংস্থান জাতীয়করণ করবে।
তেল নির্ভর অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে আসা, প্রযুক্তিখাতে তরুণ নাগরিকদের কর্মসংস্থানে নতুন নতুন খাত তৈরি, নারীর ক্ষমতায়ন ও নাগরিকদের জীবনযাপনের ওপর কড়াকড়ি শিথিলের মত বিষয়গুলো।
সৌদি পরিসংখ্যান ব্যুরোর বরাত দিয়ে দেশটির গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বিদায়ী বছরের প্রথম প্রান্তিক (জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত) মোট প্রবাসী শ্রমিকের সংখ্যা এক কোটি ৮ লাখ ৫০ হাজার থেকে কমে এক কোটি ৭ লাখ ৮০ হাজার জনে দাঁড়িয়েছে।
নয়া সংস্কার নীতির প্রকোপে বড় অঙ্কের প্রবাসী শ্রমিক কমেছে। এছাড়া বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত) শেষে প্রায় ৬২ হাজারের মতো প্রবাসী শ্রমিক কমেছে দেশটিতে।