অস্ট্রেলিয়ার ওয়ার্ক অ্যান্ড হলিডেustraliaভিসা প্রোগ্রামের আওতায় বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে ১ বছরের জন্য দেশটিতে ভ্রমণের জন্য নির্বাচিত হয়েও অস্ট্রেলিয়া যাওয়া হলো না ১০০ বাংলাদেশির। স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নির্বাচিতদের প্রত্যেকে নিশ্চিতভাবে দেশে ফিরে আসবেন মর্মে ১০ লাখ টাকা জামানতের মুচলেকাও দিয়েছিলেন সরকারের জিম্মায়। কিন্তু এত কিছুর পরও তাদের ভিসা হয়নি!
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, পৃথকভাবে জমা দেয়া ওই ১০০ আবেদন একসঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেছে অস্ট্রেলিয়া হাইকমিশন। সূত্র এও বলছে, ওই ভিসার আবেদনগুলো দিল্লিস্থ অস্ট্রেলিয়া মিশন থেকে প্রক্রিয়া (প্রসেস) করা হয়েছিল। এ অঞ্চলের সব আবেদনই এখন দিল্লি থেকে প্রসেস হয় মর্মেও সূত্রের দাবি। বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগীরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ হয়েছেন।
সমপ্রতি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সচিব পর্যায়ের বৈঠকে ফরেন অফিস কনসালটেশনেও বিষয়টি তুলেছিলেন ঢাকার কর্মকর্তারা। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার তরফে কোনো ব্যাখ্যা দূরে থাক, আলোচনাই এগোয়নি।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে এক সঙ্গে ১০০ বাংলাদেশির ভিসা আবেদন চূড়ান্ত ভাবে নাকচ হওয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে প্রত্যাখ্যাত ব্যক্তিরা। তাদের আবেদন মতে, ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১০০ জন বাংলাদেশিকে নির্বাচন সম্পন্ন করে এবং নমিনেশন পত্র প্রদান করে। যা এ ভিসা অবেদনের জন্য আবশ্যক। নমিনেশন পত্র সহ এবং ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীর অস্ট্রেলিয়া সরকারের সকল শর্ত পূরণ করে দিল্লিতে অবস্থিত অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, ট্যাক্স সার্টিফিকেট, স্বাস্থ্য বীমা, ব্যাংক সলভেন্সি সার্টিফিকেটসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ভিসা অবেদনের ফি প্রদান করে ভিসার আবেদন করা হয়। ভিসা আবেদন ফি, স্বাস্থ্য বীমা, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, আই.ই.এল.টি.এস পরীক্ষাসহ সর্বসাকুল্যে প্রত্যেক আবেদনকারীর প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ হয়।
ভিসার আইন অনুযায়ী ৬০ দিনের মধ্যে ভিসা দেয়ার সিদ্ধান্ত জানানোর কথা থাকলেও দীর্ঘ ৬ মাস পর এক সঙ্গে সকল প্রার্থীর ভিসা আবেদন নাকচ করে দেয় অস্ট্রেলিয়া হাইকমিশন। আবেদনকারী সকলের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয় যে আবেদনপত্রে এমন কিছু প্রমাণ হয় না যে প্রার্থী ভিসার মেয়াদ শেষে বাংলাদেশে ফেরত আসবেন। যখন প্রার্থীরা ভিসা আবেদন করেন, তখন অস্ট্রেলিয়া সরকারের সকল শর্ত মেনে এবং দেশে ফিরে আসার অঙ্গীকার মোতাবেক দশ লাখ টাকার বন্ড সই করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়। একসঙ্গে সকলের আবেদন নাকচ করা এবং সবাইকে একই কারণ দর্শানো রীতিমতো হঠকারিতা এমন মন্তব্য করে আবেদনকারীরা সরকারের কাছে আবেদন জানায়- সরকার মনোনীত বাংলাদেশের নাগরিকদের সঙ্গে এমন অপমানজনক আচরণ এবং চুক্তি বরখেলাপের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে।
ভিসা আবেদনকারীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এবং মর্মাহত হয়েছেন জানিয়ে তারা লিখেন- অস্ট্রেলিয়া সরকারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় এ বিষয়ে ইতিবাচক সমাধান হতে পারে। ওয়ার্ক অ্যান্ড হলিডে ভিসা প্রোগ্রাম অস্ট্রেলিয়ার একটি এক্সক্লুসিভ প্রোগ্রাম। এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া মূলত ১ বছরের ভিসা প্রদান করে থাকে। এ ভিসা পাওয়া ব্যক্তিরা অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণের সঙ্গে কাজেরও সুযোগ পান। মূলত আবেদনকারীরা সংশ্লিষ্ট দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। সরকারের সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রার্থীদের বাছাই চূড়ান্ত করে হাইকমিশনের মাধ্যমে তা অস্ট্রেলিয়া সরকারের কাছে পাঠানো হয়। যার ভিত্তিতে অস্ট্রেলিয়া সরকার ভিসা ইস্যুর সিদ্ধান্ত নেয়।