ongমেয়ের জন্মদিনের মাত্র কয়েক দিন আগে গ্রেপ্তার হন বাবা হুয়া অং। চীনের একজন নামকরা চিত্রশিল্পী তিনি। কাজ করছেন মানুষের অধিকারের জন্য। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেইজিংয়ের গণ–উচ্ছেদের প্রতিবাদ জানানোয় গত শনিবার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

উচ্ছেদ হওয়া মানুষের কাছে গিয়ে তাঁদের কষ্টের কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও টুইটারে পোস্ট করতেন এই চিত্রশিল্পী। এমনিতে চীনে ফেসবুক ও টুইটার ব্যবহারে সরকারি নিষেধাজ্ঞা আছে। তবে কারসাজি করেই এগুলো ব্যবহার করতেন হুয়া অংয়ের মতো অধিকারকর্মীরা। বেইজিং থেকে গণ–উচ্ছেদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তোলেন তাঁরা। এমন কর্মকাণ্ড মানবে কেন চীনা সরকার? আর তাই জনসমাবেশ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় হুয়া অংকে।

chardike-ad

ছোট্ট মেয়ের সঙ্গে বিচ্ছেদ হতে যাচ্ছে, অধিকারকর্মী হুয়া অং তা আগেই আঁচ করতে পেরেছিলেন। তাই গ্রেপ্তার হওয়ার একদিন আগে মেয়ের কাছ থেকে বিদায়ের একটি ভিডিও পোস্ট করেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, যা ভাইরাল হয়। এরপর বেইজিং থেকে পালিয়ে যান তিনি। তবে শেষ রক্ষা হয় না। ধরা তাঁকে পড়তেই হয়। মেয়ের তিন বছরের জন্মদিনে কাছে থাকতে পারবেন না—এমন আশঙ্কা করেছিলেন তিনি।

তবে গতকাল সোমবার অপ্রত্যাশিতভাবে জামিনে ছাড়া পান হুয়া অং। ছাড়া পেয়েই তিনি ছুটে যান মেয়ের কাছে। ছোট্ট মেয়েটির যে ওই দিন জন্মদিন! বাবা মেয়ের এক হওয়ার এই দৃশ্য ক্যামেরায় বন্দী করেন শুভাকাঙ্ক্ষীরা। ছড়িয়ে দেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। আবারও ভাইরাল হয় সেটি।

ভিডিওর মাধ্যমে হুয়া অং বলেন, ‘আমি কোনো নায়ক নই। আমি যা করেছি তা হলো সত্যকে ধারণ করেছি। যদি কেবল সত্য বলার জন্যই একজন নায়ক হয়ে যান, তাহলে চীনকে একটি ভয়াবহ দেশ বলতে হবে।’

চীনে লোকজনকে বাড়িঘর ও জমিজমা থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদের ঘটনা নতুন নয়। গত নভেম্বরে রাজধানী বেইজিংয়ে একটি ভবনে আগুন লেগে নিহত হন বেশ কয়েকজন। ওই ঘটনার পর উচ্ছেদ কার্যক্রম আবার শুরু করে প্রশাসন। প্রশাসনের দাবি, অতিরিক্ত জনবসতির কারণেই এমন বিপর্যয় হচ্ছে। আর তাই জোর করে বেইজিং থেকে মানুষজনকে সরিয়ে দেওয়া শুরু হয়। হুয়া অংয়ের মতো অধিকারকর্মীদের অভিযোগ, তীব্র শীতের মৌসুমে বিনা পুনর্বাসনে এভাবে নাগরিকদের উচ্ছেদ অন্যায়।