ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ও পরমাণু কার্যক্রম নিয়ে চলতি বছরজুড়েই টানটান উত্তেজনার মধ্যে অবশেষে উত্তর কোরিয়ার প্রতি সুর নরম করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বললেন, কোনো শর্ত ছাড়াই যেকোনো সময় পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে আলোচনার বসতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র।
টিলারসনের এই ভাষ্য যুক্তরাষ্ট্রের এতদিনের অবস্থানের একেবারে উল্টো। এতদিন যুক্তরাষ্ট্র বলে এসেছে, উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত না করা পর্যন্ত বা দেশটি পরমাণু কার্যক্রম বন্ধ না করা পর্যন্ত তাদের সঙ্গে সরাসরি কোনো আলোচনা হবে না।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে নীতি প্রণয়ন ও পর্যালোচনাবিষয়ক একটি ফোরামে টিলারসন উত্তর কোরিয়ার উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা কি চান না-চান, আসুন, দেখা করি এবং তা নিয়ে কথা বলি।’
পরামাণু কার্যক্রম নিয়ে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে উত্তর কোরিয়া। শেষ পর্যন্ত একমাত্র ঘনিষ্ট মিত্র চীনও ক্ষেত্রবিশেষে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। কিন্তু পরমাণু অস্ত্র তৈরির অভিলাস থেকে তাদের কোনোভাবেই বিরত রাখা সম্ভব হয়নি। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন কিন্তু কাজ হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ধমকে থমকে যায়নি দেশটি। শেষ পর্যন্ত বিনাশর্তে তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিলেন টিলারসন।
এদিকে, সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ায় সফর করা জাতিসংঘের রাজনীতিবিষয়ক প্রধান জেফরে ফেল্টম্যান সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, পিয়ংইয়ংয়ের কর্মকর্তারাও অনুভব করেন, ‘যুদ্ধ এড়ানো গুরুত্বপূর্ণ।’
একের পর এক উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের কূটনৈতিক টানাপোড়েন চরম রূপ নেয়। এ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের মধ্যে বাগযুদ্ধ শুরু হয় এবং সত্যিই একটি পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়।
মঙ্গলবার পলিসি ফোরাম আটলান্টিক কাউন্সিলের এক সভায় টিলারসন বলেন, ‘সাধারণভাবেই পরমাণু রাষ্ট্র হিসেবে উত্তর কোরিয়াকে স্বীকার করবে না যুক্তরাষ্ট্র।’
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে এ নিয়ে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি উত্তর কোরিয়া।
তথ্যসূত্র : বিবিসি অনলাইন