খিমছি: খিমছি হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ানদের মধ্যে প্রচলিত একপ্রকার খাবার। এটিকে বিশ্বের অন্যতম স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কোরিয়ানরা তাদের অধিকাংশ খাবারের সঙ্গেই খিমছি খায়। খিমছিতে ভিটামিন এ, বি, সি ছাড়াও প্রোবায়োটিন নামক উপাদান থাকে, যা খাদ্য হজমে সহায়তা করে। এটি ক্যান্সার রোধেও কাজ করে বলে ধরা হয়।
ইন্টারনেট সুবিধা: দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বের অন্যতম ইন্টারনেট ব্যবহাকারী দেশ। দেশটির শতকরা প্রায় ৯৮ ভাগ বাড়িতে দ্রুত গতির ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে ও মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ লোক স্মার্টফোন ব্যবহার করে। বার্তা সংস্থা সিএনএন তাদের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করে যে, দক্ষিণ কোরিয়ায় সবচেয়ে দ্রুত গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয়। উল্লেখ্য, বিশ্বজুড়ে যখন ইন্টারনেটে অতিরিক্ত আসক্তিকে একটি ঝুঁকি হিসেবে দেখা হচ্ছে, তেমনি কোরিয়ান সরকার সে দেশের মানুষকে ইন্টারনেটের অতিরিক্ত আসক্তি থেকে রক্ষার জন্য সরকারিভাবে কাউন্সেল ও মনোবৈজ্ঞানিক চিকিত্সাপ্রধান করে আসছে। তারা এ সমস্যাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়ে সমাধান করে।
বিনোদনকে প্রাধান্য দেয় তারা: দক্ষিণ কোরিয়ান শিল্পকলা ও পপ সংস্কৃতি আজ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ানরা শিল্প ও বিনোদনকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়, যার ফলে সেখানে সমৃদ্ধ চলচ্চিত্র, নাট্যশালা, সঙ্গীতশিল্প গড়ে উঠেছে। শুধু রাজধানী সিউলেই ৩০০ মিলিয়ন ডলারের নাট্যশালার বাজার ও সারা দেশে বিলিয়ন ডলারের পপ সঙ্গীত, যা কে-পপ নামে পরিচিত বাজার সৃষ্টি হয়েছে। ইউটিউবে সারা ফেলা পপ সঙ্গিত ‘খাংনাম স্টাইলও’ দক্ষিণ কোরিয়ানদের এ কে-পপ সঙ্গীতের অংশ।
তায়কোয়ান্দো চর্চা: আত্মরক্ষার জন্য কোরিয়ানরা ঐতিহ্যগতভাবে তায়কোয়ান্দো চর্চা করে আসছে। তায়কোয়ান্দো শুধু দেহের ব্যাপারই নয়, এটি একটি দর্শনও বটে, যা দেহের ও মনের শক্তিকে একত্রিত করে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখতে পারে। একটি চাকরি করা, পরিবার পরিচালনা করা কিংবা প্রয়োজনের তাগিদে যুদ্ধ করার মতো তায়কায়ান্দো একটি জীবনবিধান।
চিকিত্সার প্রাকৃতিক উপাদান: কোরিয়ায় উত্পন্ন জিনসেং চীন তাদের দেশে শতবর্ষ ধরে চাপ দূর করা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য ব্যবহার করে আসছে। এখনকার দিনে প্রধানত কোরিয়ায় উত্পন্ন ‘হারব’ বিভিন্ন রোগের চিকিত্সায় ব্যবহার করা হচ্ছে। যদিও যথেষ্ট গবেষণা করা হয়নি তবুও প্রাথমিক গবেষণায় দেখা গেছে, জিনসেং শারীরিক ও মানসিক কার্যক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম।
ভ্রমণ বিলাসিতা: দক্ষিণ কোরিয়ায় ক্যাম্পিং দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সিউলের একটি জরিপকারী প্রতিষ্ঠান তাদের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে গত তিন বছরে সেখানকার মানুষের ক্যাম্পিং দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সিউলের এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা একটি তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ ও চাপের মধ্যে জীবনযাপন করছি এবং তা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্যই মূলত এভাবে ক্যাম্পিংয়ে বের হওয়া।’
স্বাস্থ্যসেবায় তারা তৃপ্ত: ১৫টি দেশের মধ্যে একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়। সেখানে উঠে আসে দক্ষিণ কোরিয়ানরা তাদের নিজস্ব স্বাস্থ্যসেবায় সবচেয়ে বেশি পরিতৃপ্ত। প্রকৃতপক্ষে জরিপের সবকটি অংশেই কোরিয়ানরা বেশি নম্বর পেয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় ১৯৮৯ সাল থেকেই একটি সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিকল্পনা প্রচলিত রয়েছে। সেখানে জনগণের স্বার্থে অত্যন্ত শক্তিশালী স্বাস্থ্য বীমা প্রচলিত আছে।