দক্ষিণ কোরিয়ার এগ্রিকালচার, ফুড এন্ড রুরাল এফেয়ার্স মন্ত্রণালয়ের সেরা গবেষকের পুরস্কার পেয়েছেন ডঃ আকিল হোসেন। মন্ত্রণালয়টির গবেষণা প্রতিষ্ঠান এনিম্যাল এন্ড প্ল্যান্ট কোয়ারেন্টাইন এজেন্সী ছয়জনকে বছরের সেরা গবেষক হিসেবে ঘোষণা করেছে। পুরস্কার পাওয়া ছয়জন গবেষকের মধ্যে আকিল হোসেন সর্বোচ্চ স্কোর পেয়েছেন। আন্তর্জাতিক পাবলিকেশন্সগুলোর ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর বিবেচনা করে এই স্কোরিং করা হয়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে আকিলের এখন পর্যন্ত ২১ টি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।
এওয়ার্ড প্রাপ্তদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা প্রদান করবে দক্ষিণ কোরিয়ার এই মন্ত্রনালয়। এর অংশ হিসেবে আগামী ডিসেম্বরে ব্যাংককে জাতিসংঘের ফুড এন্ড এগ্রিকালচারাল অর্গনাইজেশনের ল্যাবসহ থাইল্যান্ডের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভিসিট করবেন।
আকিল ২০১৬ সালে কোরিয়ার বিখ্যাত খিয়ংপুক ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি করে গবেষণা প্রতিষ্ঠান এনিম্যাল এন্ড প্ল্যান্ট কোয়ারেন্টাইন এজেন্সীতে গবেষক হিসেবে কাজ করছেন। আকিল মুলত এন্টিবায়োটিক নিয়ে কাজ করছেন। তিনি বাংলা টেলিগ্রাফকে জানান ‘ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রামক রোগ নিরাময়ের জন্য এন্টিবায়োটিকের বিকল্প আর কিছু নেই। কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের কারণে প্রচলিত এন্টিবায়োটিকগুলো দ্রুত তাদের কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। অণুজীব বিজ্ঞানীরা আশংকা প্রকাশ করেছেন অতিদ্রুত পৃথিবী থেকে কার্যকর এন্টিবায়োটিক নিঃশ্বেষ হয়ে যাবে। সারাবিশ্বের গবেষকরা এই মহাসংকট থেকে উত্তরণের জন্য নতুন কৌশল আবিষ্কারের চেষ্ঠা করছেন’।
ডঃ আকিল তার গবেষণায় প্রাকৃতিক উৎস থেকে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ প্রতিরোধী একটি উপাদান (Methyl Gallate) চিহ্নিত করেছেন এবং এর সম্ভাব্য কার্য প্রক্রিয়া নির্ধারণ করেছেন। এই উপাদানটি প্রচলিত এন্টিবায়োটিকগুলো থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রক্রিয়ায় সংক্রমণ রোধ করে। প্রাথমিক প্রক্রিয়ায় উপাদানটি নিরাপদ বলে প্রমাণিত হয়েছে। এখন তিনি উপাদানটির কোনরকম স্বাস্থ্য ঝুকি কিংবা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কিনা তা যাছাই বাচাইয়ের কাজ করছেন।
ডঃ আকিল তার এই গবেষণা ভবিষ্যতে ব্যাকটেরিয়াঘটিত সংক্রামক রোগ দমনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
মো: আকিল হোসেন ১৯৮৫ সালে জয়পুরহাট জেলাই জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মোঃ ফজলুর রহমান এবং মা আখেরুন নেছা। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি সর্বকনিষ্ঠ। তিনি জয়পুরহাট কে জি এবং উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস সি এবং জয়পুরহাট সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি সমাপ্ত করেন। পরবর্তীতে এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগ থেকে স্নাতক এবং মাস্টার ডিগ্রী অর্জন করেন।