Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

রাজধানীর বাজারে আবারও পিয়াজের কেজি ৯০ টাকা ছাড়িয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পিয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশি পিয়াজ ৯০-৯৫ টাকা। আর আমদানি করা পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকায়। এর পাশাপাশি বাজারে শীতকালীন সবজিতে ভরপুর হলেও দাম আগের মতোই চড়া। কাওরানবাজার, হাতিরপুল বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। বিক্রেতারা জানান, পিয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার পর মাঝে কিছুটা কমেছিল।

chardike-ad
 কিন্তু আবার হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। আমদানি করা পিয়াজের দাম বেড়েছে বলেই প্রভাব পড়েছে দেশি পিয়াজের দামে।

খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশি পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকা দরে, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৭০-৭৫ টাকায়। আর আমাদানি করা পিয়াজের দাম এক লাফে বেড়ে হয়েছে ৭৫ টাকা কেজি। যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৫-৬০ টাকা। অন্যদিকে রাজধানীর কাওরানবাজারে পাইকারিতে দেশি পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকা কেজি দরে। এছাড়া আমদানি করা পিয়াজ পাওয়া যাচ্ছে মান ভেদে ৭২-৭৫ টাকা কেজিতে। পাইকাররা জানান, ৩ দিন আগেও কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা কম ছিল পিয়াজের দর।

এদিকে শীতের আগাম সবজি বাজার দখল করেছে। বাজারে এখন তাজা ফুলকপি, সতেজ বাঁধাকপি, সদ্য গাছ থেকে পেড়ে আনা শিম, টসটসে কাঁচা টমেটো। দামও বেশ কিছুটা কমেছে। কিন্তু শহরের নিম্ন আয়ের মানুষের নাগালে এখনো শীতের সবজি আসেনি। একটি মাঝারি আকারের ফুলকপি ৪০ টাকা দিয়ে কিনতেই বাজেটে চাপ পড়ছে তাদের।
ট্রেডিং করপোরেশ অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার দরে দেখা গেছে, গতকাল দেশি পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭০-৮০ টাকা। এক মাসের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ২৬ শতাংশ। আর আমদানি করা পিয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭৫ টাকায়। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫০-৬০ টাকা। এক মাসের ব্যবধানে এই পিয়াজের দাম বেড়েছে ২২ শতাংশ।
ভোক্তারা জানান, বাজারে দেশি বা আমদানি কোন ধরনের পিয়াজেরই কমতি নেই। এখন পিয়াজের দাম কমার কথা। কারণ বাজারে কিছু নতুন পিয়াজ এসেছে। কিন্তু পিয়াজের দাম না কমে বরং বেড়ে গেছে।

হাতিরপুল বাজারের ব্যবসায়ী মো. সেলিম বলেন, হঠাৎ করেই পিয়াজের দাম বেড়ে গেছে। তবে কেন বেড়েছে তা তিনি বলতে পারেননি। তিনি বলেন, আড়ত থেকে আনতেই প্রতি কেজি ৮০ টাকার ওপর পড়েছে। তাহলে বিক্রি করবো কত? আমাদের তো অবশ্যই কিছু মুনাফা করতে হবে। তিনি বলেন, বাজারে আমরা প্রতি কেজি পিয়াজ বিক্রি করছি ৮৫-৯৫ টাকায়।
এই ব্যবসায়ীর কথার সত্যতা পাওয়া যায় কাওরান বাজারে। এই বাজারের পাইকারি বিক্রেতারা প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) চাচ্ছেন ৪০০-৪২০ টাকা। পিয়াজ বিক্রেতা কামরুল হাসান জানান, কেন বাড়ছে তা বলতে পারবো না। তবে আমারা মোকাম থেকে বেশি দামে কিনছি বলেই বেশি দামে বিক্রি করছি। কম পাইলে কমে বিক্রি করবো বলে জানান তিনি।

এদিকে কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতের আগাম সবজি ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, লাউ এখন বাজারে ভরপুর। সঙ্গে ঝিঙা, পটোল, করলা, ঢেঁড়স, ধুন্দল, চিচিঙ্গা, বেগুন, শাল গম, পাকা ও কাঁচা টমেটো সবকিছুর সরবরাহই রয়েছে পর্যাপ্ত। এরপরও প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে টমেটো। প্রতি কেজি পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি। সে হিসেবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে এ পণ্যটির দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা। তবে কাঁচা টমেটো গত সপ্তাহের মতোই ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কাওরান বাজার আড়তে প্রতিটি ফুলকপি সর্বোচ্চ ১৫-২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই ফুলকপি অন্য বাজারে ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আড়তের ৩৫-৪০ টাকার শিম খুচরা বাজারেই ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

গত সপ্তাহে শিম ৪০-৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন তা ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা দরে। বেগুনের দাম ৪০-৫০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫০-৬০ টাকা। আর পটোল গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ৩০ টাকায় নেমে আসলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। তবে মুলা আগের মতোই ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শাল গম বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকায়। আর ৩০ টাকায় নেমে আসা ধুন্দলের কেজি আবার বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা। আর ৩০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া লাউয়ের দাম বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা। তবে গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে করলা। এ সবজিটির কেজি ৪০-৪৫ টাকা।
সবজি বিক্রেতা মো. জামান বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় সব ধরনের সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহে গাজরের কেজি বিক্রি করেছি ৮০ টাকা, এখন বিক্রি করতে হচ্ছে ১০০ টাকা। ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা শিমের দাম বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা। পটোলের দাম আবার ৫০ টাকায় চলে এসেছে। বাজারে কোনো সবজিই ৪০ টাকার নিচে নেই।
এ ছাড়া স্থিতিশীল রয়েছে মুরগির মাংসের বাজারও। সাদা ব্রয়লার মুরগি বিক্রি গত সপ্তাহের মতোই ১২০-১২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাল কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকা কেজি দরে। গরুর মাংস ৫০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭০০-৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।