নাতির সঙ্গে পিএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ৬৫ বছর বয়সের নানি সুন্দরী বেগম। ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার সাউথকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তিনি এবার পিএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন।
হরিরামপুর ইউনিয়নের সাউথকান্দা গ্রামের বর্গাচাষী কৃষক আবুল হোসেনের স্ত্রী সুন্দরী বেগম। এ দম্পতির চার ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে একজন সৌদিপ্রবাসী, দু’জন ভ্যানচালক। শুধু ছোট ছেলে সাইদুল ইসলামকে কষ্ট করে এইচএসসি পাস করিয়েছেন।
জানা যায়, ৬ বছর আগে সুন্দরী বেগম বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কাশিগঞ্জ শাখায় অ্যাকাউন্ট খুলতে যান। সুন্দরী বেগম কোনো রকম স্বাক্ষর করতে শিখেছিলেন। তিনটি স্বাক্ষরের মধ্যে একটি স্বাক্ষর ভুল হওয়ায় ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ফাইলটি সুন্দরী বেগমের সামনে ছুড়ে মারেন। কেঁদে কেঁদে বাড়ি ফিরে তিনি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেন, যে কোনো মূল্যে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে বেরিয়ে আসবেন তিনি।
পরের দিন নাতি জিহাদকে নিয়ে সাউথকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ধাইয়ের কাজের পাশাপাশি প্রতিদিন নিয়মিত স্কুলে ক্লাস করতেন।
৬ বছর পরিশ্রমের পর এ বছর তিনি নাতির সঙ্গে পিএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছেন। সাউথকান্দা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুস সালাম জানান, এ বয়সে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করে সুন্দরী বেগম নিরক্ষরতার অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বেরিয়ে আসার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।