মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাকাশ সংস্থা ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, নাসা’র বর্ষসেরা সেরা বিজ্ঞানীর খেতাব পেয়েছেন পাবনার মেয়ে মাহমুদা সুলতানা মুনমুন। ‘কোয়ান্টাম ডট স্পেক্ট্রোমিটার ডিভাইস’ নামের এক প্রযুক্তি আবিস্কার তাকে দিয়েছে ‘সেরা উদ্ভাবক-২০১৭’র সন্মান। বিজ্ঞানী মুনমুনের এই অর্জনে খুশি তার নিজ জেলা পাবনার মানুষও।
পাবনার ঈশ্বরদীর সলিমপুর ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন মাহমুদা সুলতানা মুনমুনের। তার পিতা গোলাম জাকারিয়া মানু একজন প্রকৌশলী ছিলেন। তবে তার বাবা বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পাবনার ঈশ্বরদী থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন, দূরত্বটা কোনো হিসেবেই কম নয়। অথচ, কী দারুণভাবেই না বাংলাদেশের মুনমুন আজ নাসা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। তার আবিষ্কার ‘কোয়ান্টাম ডট স্পেক্ট্রোমিটার ডিভাইস’ তাক লাগিয়ে দিয়েছে বিশ্ববাসীকে। এই কোয়ান্টাম ডট বা বিন্দু মূলত অর্ধপরিবাহী এক ধরনের ন্যানোক্রিস্টাল। যা কখনও খালি চোখে দেখা যায় না। এর আকার এবং রাসায়নিক গঠন নির্ভর করে তা আলোর বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্য কতোটুকু শোষণ করবে তার উপর। সাধারণত টেলিভিশন, স্মার্টফোনের ক্যামেরা, মেডিকেল ডিভাইসে ব্যবহৃত হয় ন্যানোক্রিস্টাল।
২৯ বছর বয়সী মুনমুনের ছোটবেলা কেটেছে বাংলাদেশেই। ৫ম ও ৮ম শ্রেণিতে পেয়েছেন ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় পরিবারের সাথে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানেই পরবর্তী লেখাপড়া, উচ্চশিক্ষা অর্জন। ক্যালিফোর্নিয়ার সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে গ্রাজুয়েশন। তারপর পিএইচডি। ২০১০ সালে জব ফেয়ারে অংশ নিয়ে কাজ করার সুযোগ পান নাসায়। তারপর পুরোটাই গল্প।
মুনমুনের আবেগ আপ্লুত চাচা আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা এত আনন্দ পেয়েছি যে বলে বোঝানো যাবে না। মুনমুনের জন্য আমরা গর্বিত। আর
চাচী খালেদা খানম চাইলেন দোয়া, আমাদের মেয়ে যেন আরো অনেক বড় হয়।
মুনমুনের এই অগ্রযাত্রায় গর্বিত পাবনার মানুষ। তাদের চাওয়া, মুনমুন-ই হবে এখানকার হাজারো তরুণ-তরুণীর পথপ্রদর্শক।
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান মিন্টু বলেন, মুনমুনকে নতুন প্রজন্ম আদর্শ হিসেবে নিতে পারে। সে যে জায়গায় গিয়েছে তা সত্যিই অনন্য।অার জেলা প্রশাসক রেখা রানী বালোর কথা এই অর্জন মুনমুনের একার নয়, সমগ্র বাংলাদেশের।
এলাকাবাসীও জানেন, ছোট্ট সেই মুনমুন এখন অনেক বড় হয়েছে, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ব্যস্ততা। তবুও সুযোগ করে মুনমুনকে একবার নিজ এলাকায় ঘুরে যাবার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তারা।