পশ্চিমা বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বড় বড় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে হ্যাকিংয়ের জন্য নর্থ কোরিয়াকেই দায়ী করে আসছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এবার নর্থের হ্যাকিংয়ে ব্যবহৃত দুটি ভাইরাসের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে মার্কিন প্রশাসন।

দেশটির ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এবং এফবিআই যৌথভাবে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। তারা জানায়: বিভিন্ন দেশের বিমান সংস্থা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান এবং সংবাদমাধ্যম হ্যাক করার জন্য এ দুই ধরনের ম্যালওয়্যার ব্যবহার করে আসছে নর্থ কোরিয়ার হ্যাকাররা।

chardike-ad

এর মধ্যে একটির নাম ‘ফলচিল’, যা হ্যাকাররা ব্যবহার করছে ২০১৬ থেকে। দূর থেকেই আক্রান্ত কম্পিউটারে নজরদারি এবং নিয়ন্ত্রণের সুযোগ করে দেয় এ ম্যালওয়্যারটি। আক্রান্ত অন্য কোনো ফাইল কিংবা ওয়েবসাইট থেকে অন্য কম্পিউটার এই ম্যালওয়্যার দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে। এই ম্যালওয়্যারটি একাধিক স্তরের প্রক্সি ব্যবহার করায় এর উৎস কিংবা হ্যাকারের পরিচয় জানা বেশ দুরূহ।

অপর ম্যালওয়্যারটির নাম ‘ভল্গমার’, যা মূলত ফিশিংয়ের মাধ্যমে আক্রমণ করে থাকে। এক্ষেত্রে স্প্যাম মেইল পাঠিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যেমন- ইউজারনেম, পাসওয়ার্ড, জন্ম তারিখ, ক্রেডিট কার্ড নাম্বার প্রভৃতি তথ্য হাতিয়ে নেয় হ্যাকাররা।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার মতে, ২০১৩ সাল থেকে এই ম্যালওয়্যারটি ব্যবহার করছে নর্থ কোরিয়া। তবে এসব হ্যাকিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছে নর্থ কোরিয়া।

এফবিআই এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি জানিয়েছে: এই দুটি ম্যালওয়্যারই ‘হিডেন কোবরা’-র সাথে যুক্তও। মূলত নর্থ কোরিয়ার সরকার কর্তৃক সংঘটিত বিভিন্ন হ্যাকিং নির্দেশ করতে ‘হিডেন কোবরা’ নামটি ব্যবহার করে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। তাদের মতে, ২০০৯ সাল থেকেই সক্রিয় রয়েছে হিডেন কোবরা।

গোয়েন্দা সংস্থা দুটি বিপুল পরিমাণ আইপি ঠিকানাও শনাক্ত করেছে। এসব ম্যালওয়্যারের মাধ্যমে সংঘটিত আক্রমণগুলো এসব আইপি অ্যাড্রেসের মধ্য দিয়েই হয়ে থাকে। এসব আইপি ঠিকানার একটি বড় অংশই ভারতের। এরপরই আছে পাকিস্তান এবং ইরান।

সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু বড় সাইবার হামলার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে নর্থের কোরিয়ার বিরুদ্ধে। এর মধ্যে আছে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, সনি পিকচারসের কম্পিউটার নেটওয়ার্ক দখল করা প্রভৃতি। এছাড়া সাম্প্রতিক ওয়ানাক্রাই র‍্যানসমওয়ারের জন্যও দায়ী করা হচ্ছে দেশটিকে।