লিবিয়ায় বাড়ি, গাড়ী কিংবা জমি বিক্রির মত নিলাম ডেকে মানুষ বিক্রি করার খবর পাওয়া গেছ। সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যম সিএনএনের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন ভয়ঙ্কর খবর। লিবিয়ার অজ্ঞাত কোন এক স্থানে আগস্ট মাসে এ নিলাম হয় বলে দাবি করা হয়েছে ভিডিওতে। সেখানে দুই ব্যক্তিকে এক হাজার ২০০ লিবীয় দিনারে বিক্রি করা হয়েছিল।
নিলামে বিক্রি হওয়া দুই যুবকের একজন ২০ বছর বয়সী নাইজেরিয়ার নাগরিক বলে ধরা হচ্ছে। অপরজনের পরিচয় প্রতিবেদনটিতে প্রকাশ করা হয়নি। ভিডিওটিতে নিলামকারীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ওই দুজন কৃষিকাজের জন্য খুব শক্ত সমর্থ। ওই ভিডিওতে নিলামকারীদের কাউকে দেখা যায়নি।
বিক্রি হওয়া ছেঁড়া কাপড় আর জীর্ণ চেহারার দুই নাইজেরিয়ান যুবকের অবস্থা শোচনীয়। তাদের মুখ থেকে কোন শব্দই বের হচ্ছে না। তাদের মতো বিক্রি হওয়া সব দাস মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। প্রতিবাদ করার মতো শক্তি নেই তাদের শরীর আর মনে। ক্রেতা-বিক্রেতার কথা মতো চলতে বাধ্য হচ্ছে তারা। বিক্রি হওয়াদের সাথে কথা বলতে চাইলে অত্যাচার আর নির্যাতনের ভয়ে মুখ খুলতে অস্বীকৃতি জানায় এরা।
সিএনএনের গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা হয়েছে আরেকটি ঘটনা। এতে দেখানো হয়, গত মাসে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে মানুষ বিক্রির জন্য নিলামের আয়োজন করা হয়। এখানেও নিলামে বিক্রি হয় মানুষ। দেশটির কমপক্ষে ৯টি স্থানে এ রকম নিলাম হয়ে থাকে।
মূলত নাইজেরিয়া, সেনেগাল ও গাম্বিয়ার মতো অতি দরিদ্র দেশের ভাগ্যহারাদের অনেকেই উন্নত জীবনের স্বপ্ন নিয়ে লিবিয়া হয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রবেশের চেষ্টা করে। নৌকায় করে ইটালি যাওয়ার চেষ্টার সময় উত্তর দিকে লিবিয়ার ভূমধ্যসাগরের উপকূল থেকে তাদের অনেকেই অপহরণের শিকার হয়।
এরপর বন্দীদের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ চাওয়া হয়। তাদের পরিবার টাকা দিতে রাজি না হলে তাদের ওপর অত্যাচার করা হয়। আটকে রেখে, না খাইয়ে পুষ্টিহীন করে কথা শুনতে বাধ্য করা হয়। মুক্তি না পাওয়াদেরই এমন বাজারে এনে বিক্রির জন্য নিলামে উঠানো হয়।