বিমানের যাত্রীদের মাঝেমধ্যেই মেজাজ হারিয়ে ফেলার ঘটনা নতুন নয়। আকাশে উড়াল দেওয়ার মতো উত্তেজনার পাশাপাশি আবদ্ধ অবস্থা তো মনের মধ্যে বাড়তি চাপ তৈরি করতেই পারে। তবে একই বিমানে ভিআইপি ক্লাস ও ইকোনমি ক্লাস সিট থাকলে এই মেজাজ হারিয়ে ফেলা আরো বিপজ্জনক রূপ নিতে পারে বলে জানা গেছে নতুন এক গবেষণায়।
ডেইলি মেইলে প্রকাশিত এক সংবাদে জানা যায়, একই বিমানে ফার্স্ট ক্লাস কম্পার্টমেন্ট ও ইকোনমি ক্লাস সিট থাকলে বিপদ ঘটার আশঙ্কা বাড়ে। আপাতত শুনে বিচিত্র মনে হলেও বিষয়টি চিন্তা করার মতো। টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের রটম্যান স্কুল অব ম্যানেজমেন্টের শিক্ষক ক্যাথেরিন ডি’ সেলিস ও হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের শিক্ষক মাইকেল নর্টনের একটি একাডেমিক গবেষণা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
গবেষণায় দেখা যায়, ফার্স্ট ক্লাস কম্পার্টমেন্টের যাত্রীরা সাধারণত উচ্চবিত্ত হয়ে থাকেন। ইকোনমি ক্লাসের যাত্রীদের প্রতি কিংবা ইকোনমি ক্লাসের উপস্থিতিই তাদের চটিয়ে দেয়। তাঁরা ফার্স্ট ক্লাস কম্পার্টমেন্টের যাত্রী, এ জন্য তাঁদের মধ্যে এক ধরনের বাড়তি অহমিকা বোধ কাজ করে। তাঁরা যে কেবল বিলাসবহুল ব্যবস্থাপনার সুবাদে নিজেদের চাহিদার কথা বারবার জানান তা-ই নয়, ইকোনমি ক্লাসের উপস্থিতির জন্য প্রায়ই বেশ চটে থাকেন তাঁরা। গবেষণা বলছে, এই রাগ রূপ নিতে পারে ভয়াবহ আঙ্গিকে।
অন্যদিকে, ইকোনমি ক্লাসের যাত্রীরাও প্রায় একই রকম কারণে রেগে যেতে পারেন। ফার্স্ট ক্লাসের যাত্রীদের উপস্থিতি, বাড়তি খাতিরের জন্য তাঁরা এক ধরনের হীনমন্যতায় ভুগতে পারেন, ভুগেও থাকেন। প্রথম শ্রেণির যাত্রীদের কাছে নিজেদের হীনমন্য বোধ করার পাশাপাশি পরিস্থিতির প্রভাবেও বেশে খেপে যেতে পারেন ইকোনমি ক্লাসের যাত্রীরা।
গবেষণায় বলা হচ্ছে, একই প্লেনে এ দুই ঘরানার ব্যবস্থাপনা থাকা সুবিধাজনক বিষয় নয় মোটেও। এ জন্য মেজাজ খোয়ানোর ঘটনা ঘটতেই পারে। আর এ ধরনের ঘটনায় বিমান প্রায় সাড়ে নয় ঘণ্টা পর্যন্ত বিলম্বের আশঙ্কা থাকে।
তবে মেজাজ হারানোর আশঙ্কা ফার্স্ট ক্লাস কেবিনের যাত্রীদেরই বেশি থাকে। এ ধরনের কেবিনগুলোয় এমন ঘটনার আশঙ্কা তিন গুণ বেশি। আবার ফার্স্ট ক্লাস কেবিনের উপস্থিতি থাকলে ইকোনমি ক্লাসে হট্টগোল বাধার আশঙ্কা চার গুণ বেড়ে যায়।