পদত্যাগ করলেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা? শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ১০ টায় সিঙ্গাপুর থেকে কানাডার উদ্দেশে রওনা হওয়ার পূর্বে তিনি পদত্যাগ করেন বলে তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
রাষ্ট্রপতি বরাবর তিনি এ পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন বলে ওই পারিবারিক সূত্র জানায়। তবে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের এ বিষয়টি সরকারের কোন মহল থেকে নিশ্চিত করা হয়নি। এখন সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী পরবর্তী প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিতে হবে বলে আইন বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
গত ৩ অক্টোবর অসুস্থতার বিষয়টি উল্লেখ করে এক মাসের ছুটিতে যান প্রধান বিচারপতি সিনহা। পরবর্তীতে ওই ছুটি ১০ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি বৃদ্ধি করেন। এরপর ১৩ই অক্টোবর তিনি অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন। ঢাকা ত্যাগের পূর্বে এক খোলা চিঠিতে বিচারপতি সিনহা দাবী করেন তিনি অসুস্থ নন। এবং তিনি দেশে ফিরে আসবেন বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেন। বেশ কিছুদিন সস্ত্রীক অস্ট্রেলিয়ায় তার বড় কন্যার বাসায় অবস্থানের পর গত সোমবার চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর আসেন। সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউট হাসপাতালে তিনি চারদিন চিকিৎসা নেন। চিকিৎসা শেষে তার দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু এক অজানা কারণে তিনি দেশে না ফিরে কানাডায় উদ্দেশে সিঙ্গাপুর ত্যাগ করেন। কানাডায় যাওয়ার পূর্বে তিনি পদত্যাগপত্রে সই করেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানায়।
প্রসঙ্গত, বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ওই বাতিলের মূল রায়টি লিখেন প্রধান বিচারপতি সিনহা। রায়ে রাষ্ট্র, সমাজ, রাজনীতি, নির্বাচন কমিশন, সংসদ ও বিচারব্যবস্থা নিয়ে নানা পর্যবেক্ষণ দেন তিনি। রায়ের ওই পর্যবেক্ষণ নিয়ে প্রধান বিচারপতির সমালোচনায় সরব হন সরকার দলীয় মন্ত্রী-নেতারা। এমনকি এসব পর্যবেক্ষণ স্বতঃ:প্রণোদিত হয়ে প্রত্যাহারের জন্য প্রধান বিচারপতির প্রতি দাবি জানানো হয়। রায় নিয়ে এই টানাপড়েনের মধ্যেই তেসরা অক্টোবর এক মাসের ছুটিতে যান তিনি। ওই ছুটিতে থাকা অবস্থায় বিদেশে বসে তিনি পদত্যাগ করলেন। তার অনুপস্থিতিতে গত এক মাস ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্বপালন করছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের জ্যৈষ্ঠ বিচারক বিচারপতি মোহাম্মদ ওয়াহ্হাব মিঞা।
সূত্র: ইত্তেফাক