একজন ফরাসি শিশু বাংলাদেশের খেলনা নিয়ে খেলছে। পুতুলের মতো জাপানি শিশুরা বাংলাদেশের পুতুল নিয়ে আনন্দে মেতে ওঠে। আর স্প্যানিশ শিশুর হাতেও বাংলাদেশের খেলনা শোভা পায়। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে এটা ভাবতেই ভালো লাগে। এই তিনটি দেশের পাশাপাশি উন্নত দেশগুলোতে এখন বাংলাদেশি খেলনার ব্যাপক চাহিদা। প্রতিবছরই বাংলাদেশি খেলনার রপ্তানি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশি খেলনা রপ্তানি বেড়েছে দুই হাজার গুণের বেশি। ছয় বছর আগে যেখানে বছরে মাত্র সাত হাজার ডলারের মতো খেলনা রপ্তানি হতো, এখন তা বেড়ে দেড় কোটি ডলারে পৌঁছেছে। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ প্রায় ১২৬ কোটি টাকা। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশি খেলনার চাহিদা সামনে রেখে অবশ্য খেলনা কারখানা নির্মাণে বিনিয়োগেও আগ্রহী হয়ে উঠছেন উদ্যোক্তারা। রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) এবং এর বাইরে বেশ কয়েকটি রপ্তানিমুখী খেলনার কারখানা গড়ে উঠেছে।
খেলনা রপ্তানিতে উদ্যোক্তার জন্য কেমন সম্ভাবনা—এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সম্প্রতি কুমিল্লা রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (ইপিজেডে) হাসি টাইগার নামে একটি কারখানা সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়। ৪৬ হাজার বর্গফুটের এই কারখানা চালুর বছরে অর্থাৎ ২০১৪ সালে মাত্র ৪২ হাজার ডলারের খেলনা রপ্তানি করেছে। চলতি বছরের প্রথম সাত মাসেই (জানুয়ারি-জুলাই) রপ্তানির পরিমাণ নয় লাখ ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশের বিভিন্ন ইপিজেডে দুটি খেলনা কারখানা আছে। হাসি টাইগার এর একটি। নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে সনিক লিমিটেড নামে আরেকটি খেলনা কারখানা আছে।
ইপিজেডের বাইরে আরও কয়েকটি কারখানা আছে। এর একটি চট্টগ্রামের আনোয়ারায় গোল্ডেন সন নামের প্রতিষ্ঠান আছে। এটি দেশি প্রতিষ্ঠান। শিশুদের জন্য খেলার সামগ্রী তৈরি করে অস্ট্রেলিয়ায় রপ্তানি করে থাকে। এ ছাড়া গাজীপুরের বে অর্থনৈতিক অঞ্চলে চীনের খেলনা উৎপাদক প্রতিষ্ঠান মাল্টিটেক ইন্টারন্যাশনালের একটি কারখানা করেছে। এই কারখানা ইতিমধ্যে উৎপাদন শুরু করেছে এবং চলতি নভেম্বর মাসের মাঝামাঝিতে রপ্তানি শুরু হবে। বে অর্থনৈতিক অঞ্চলের কর্মকর্তারা জানান, মাল্টিটেক ইন্টারন্যাশনাল যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের জন্য খেলনা তৈরি করে। বাংলাদেশের কারখানাটি বিশিষ্ট ব্যক্তি ও তারকাদের প্রতিকৃতির খেলনা তৈরি করবে। প্রথম আলো