‘মরার সময় চলে এসেছে। কিন্তু মরলে ভোটটা দিয়েই যেন মরি।’ কয়েকদিন আগেই গণমাধ্যমে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন গত জুলাইয়ে শতবর্ষ পার করা শ্যামশরণ নেগি। তিনি ‘স্বাধীন ভারতের প্রথম ভোটার’। আজ (বৃহস্পতিবার) হিমাচলপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে ভোট দিতে গেলে লাল কার্পেটে তাকে স্বাগত জানানো হবে।
বয়সের কারণে কিছু শারীরিক সমস্যা রয়েছে তার। তবে দায়িত্বে অবিচল শ্যামশরণ। তিনি ও তার স্ত্রী হীরা মণি এবারও ভোট দেবেন। এমন মানসিকতাকে সম্মান দিতেই প্রশাসনও তার ভোট দেয়াকে স্মরণীয় করে রাখতে চাচ্ছে। বাড়ি থেকে ভোট কেন্দ্রে আনতে পাঠানো হবে গাড়ি। ভোটকেন্দ্রে থাকবে সংবর্ধনার ব্যবস্থাও।
স্বাধীন ভারতে প্রথম ভোট হয়েছিল ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু হিমাচলের কিছু পাহাড়ি এলাকা তখন বরফে ঢাকা থাকবে বলে ছ’মাস আগে সেখানে নির্বাচন হয়। অর্থাৎ ১৯৫১ সালে নির্বাচনে সবার আগে ভোট দিয়েছিলেন শ্যামশরণ। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে গুগল তার এই কাহিনী নিয়ে একটি ভিডিও বানিয়ে ভোট দেয়ার আবেদন জানিয়েছিল। তুমুল জনপ্রিয় হয় ভিডিওটি। তখন থেকেই রীতিমতো সেলেব্রিটি শতায়ু এই বৃদ্ধ।
কল্পার সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট অবনীন্দ্র কুমার জানিয়েছেন, কিন্নর জেলার ডেপুটি কমিশনার তথা নির্বাচনী অফিসার এন কে লথের নির্দেশে শ্যামশরণকে যথাযথ সম্মান দিয়ে লাল কার্পেট পেতে ভোটকেন্দ্রে স্বাগত জানানো হবে। শ্যামশরণের দৃষ্টান্ত দেখিয়ে প্রশাসনের বার্তা দিতে চায়, সবাই যেন এসে ভোট দেয়ার দায়িত্বটা পালন করেন।
বরফে ঢাকা কিন্নর কৈলাস পর্বতশ্রেণি ঘেরা কল্পা গ্রামের একটা বাড়তি আকর্ষণ এখন শ্যামশরণ। দেশ-বিদেশ থেকে আসা পর্যটকদের অনেকেই যান তার সঙ্গে দেখা করতে। নব্বইটা বসন্ত পেরিয়েও অতিথি আপ্যায়ণে সদাসতর্ক এক সময়ের এ স্কুল শিক্ষক। খ্যাতি নিয়েও নির্বিকার। সূত্র : আনন্দবাজার