ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের প্যানেল নীল দলের সাধারণ সভায় শিক্ষকদের দু’গ্রুপের মধ্যকার হাতাহাতির ঘটনায় এক পক্ষের মানববন্ধনের পরের দিন পাল্টা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে অন্য পক্ষ।
মানববন্ধনে দাবি করা হয়, বৃহস্পতিবারের সাধারণ সভায় প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানীর ওপর সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দিন হামলা চালান। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ওইদিনের ঘটনার সুরাহা করার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের প্রতি অনুরোধ জানান বক্তারা। একই সঙ্গে একটি মহল ওইদিনের ঘটনাকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে গণমাধ্যমকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন বক্তারা।
সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজের ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
নীল দলের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদের সভাপতিত্বে ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন- সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আবদুর রহিম, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম খান, অধ্যাপক সৈয়দ শামসুদ্দীন।
এ ছাড়াও মুঠোফোনে বক্তব্য রাখেন- বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
মাকসুদ কামাল বলেন, ঘটনাকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আজ আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ এখানে দাঁড়িয়েছি সত্যকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য।
মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে নীল দলের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা রক্ষা করা সকলের দায়িত্ব। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য্য রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড এগিয়ে যাচ্ছে। একটি মহল পরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার চেষ্টায় লিপ্ত। আমাদের মাঝে দ্বিমত থাকবে তবে শিক্ষার উন্নয়নে, মান সমুন্নত রাখতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, নীলদলের সভায় একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। সভায় বির্তক থাকবে এটি স্বাভাবিক। কিন্তু সেটিকে সুন্দরভাবে পরিবেশন করতে হবে। কিন্তু সেদিনের ঘটনা নিয়ে মিথ্যাচার করা হচ্ছে যেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভাল নয়।
বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, এটা আমাদের জন্য বিব্রতকর। সারা বাংলাদেশে উপাচার্য পরিবর্তন হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় ঠিকভাবে চলছে। কিন্তু ঢাবিতে ৮ বছর পর উপাচার্য পরিবর্তন হয়ে নতুন উপাচার্য এসেছে। তার নেতৃত্বে সবকিছু চলবে, স্বাভাবিক।
অধ্যাপক সৈয়দ শামসুদ্দীন বলেন, সেদিন ঘটনাস্থল থেকে ২ গজের মধ্যে আমার অবস্থান ছিল। বক্তব্য শুনছিলাম। প্রক্টর বক্তব্য রাখার সময় আমাদের এক সহকর্মী প্রক্টরের দিকে তেড়ে আসেন। তখন অন্য সহকর্মীরা তাকে সরিয়ে দেন। এটা নিরেট সত্য। কিন্তু এ ঘটনা নিয়ে মিথ্যাচার করা হচ্ছে।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আবদুর রহিম বলেন, সেই দিন দুই জন অধ্যাপক ভিডিও ধারণ করেছিলেন। আর নীল দলের আহ্বায়ক ঘটনার মীমাংসা না করে উল্টো উসকানি দিচ্ছেন। একটি পক্ষ চায় এটিকে বর্তমান উপাচার্যের ব্যর্থতা হিসেবে উপস্থাপন করতে। এটি নীলদলের অভ্যন্তরীণ বিষয়, প্রশাসনের বিষয় না।
এর আগে গতকাল মানববন্ধন করেছে নীল দলেরই অপর একটি অংশ। এই অংশটির অভিযোগ সেদিনস সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দিনের ওপর হামলা হয়েছে। হামলা চালিয়েছেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী। জাগো নিউজ