Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

asha-with-mother‘মেডিকেলে ভর্তি হওয়া মেয়েকে খরচ দিতে পারছেন না দিনমজুর মা’ এই শিরোনামে জাগো নিউজে সংবাদ প্রকাশের পর আশা’র পড়াশুনার দায়িত্ব নিলেন এক আমেরিকা প্রবাসী।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ওই অমেরিকা প্রবাসী জানান, সীমান্তবর্তী ঠাকুরগাঁওয়ের প্রত্যান্ত অঞ্চলের এক দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থী মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার পর পড়াশুনা অনিশ্চিত খবরটি আমার মনে নাড়া দেয়। তখন সিদ্ধান্ত গ্রহন করি দরিদ্র মেধাবী আশা’র মেডিকেলে পড়ালেখা শেষ না হওয়া পর্যন্ত খরচ আমি দিব।

chardike-ad

পরে ঠাকুরগাঁওয়ে আশা’র সাথে যোগাযোগ করে কথা বললে তার মা আর্জিনা বেগম রাজি হয়। ক্লাশ শুরু হওয়ার পর থেকে আশা’র ব্যাংক একাউন্টে প্রতি মাসের খরচ পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

মাবনপ্রেমী ওই প্রবাসীর ঘনিষ্ট ব্যাক্তি রাজশাহীর উদয়ন ডেন্টাল কলেজের প্রিন্সিপাল ডাঃ. ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জানান, নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ওই অমেরিকা প্রবাসী ব্যক্তিটি আমাদের দেশের অনেক হতদরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিন যাবত সহায়তা করে আসছেন। তার সহায়তায় দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ থেকে অনেক শিক্ষার্থী ডাক্তার হয়ে বের হয়েছে আবার অনেকে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছেন। “মেডিকেলে ভর্তি হওয়া মেয়েকে খরচ দিতে পারছেন না দিনমজুর মা” সংবাদটি দেখার পর সে আশার দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলে। পরবর্তীতে আশার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হলে একমত প্রশন করে তার মা আর্জিনা বেগম।

আশা’র মা আর্জিনা বেগম জানান, অনেক কষ্ট করে মেয়েটি আজ এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছি। মেডিকেলে পড়াশুনার খরচ নিয়ে খুবই চিন্তিত ছিলাম। অবশেষে এক মানবপ্রেমী প্রবাসী ব্যাক্তি আশা’র ডাক্তারি পড়ালেখা শেষ না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আল্লাহ ওই ব্যক্তির মঙ্গল করুক।

মেধাবী শিক্ষার্থী আশা আক্তার জানান, ছোট থেকে বাবার আদর ছাড়াই বড় হয়েছি। একমাত্র আমার মা’ই ছিল আমার বাবা-মা। অনেক সংগ্রাম করে আমাকে পড়াশুনা করিয়েছেন আমার মা। যে ব্যক্তিটি আমার পড়াশুনার দায়িত্ব নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন আমি যেন ওই শ্রদ্ধেহ প্রবাসী ব্যক্তি ও মায়ের ইচ্ছেটুকু পূরণ করতে পারি। ডাক্তার হয়ে অসহায় ও মানবতার সেবায় কাজ করতে চাই।

উল্লেখ্য, আশা শিবগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপরে শিক্ষকদের সহযোগিতায় ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজে এইচএসসিতে ভর্তির সুযোগ হয় আশার। অনেক কষ্ট করে পড়াশুনার খরচ জোগাড় করতে থাকে আশার মা আর্জিনা বেগম। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে জিপিএ-৫ পান আশা। মায়ের ইচ্ছে ছিল ছোট মেয়েকে ডাক্তার বানানোর।

সেই স্বপ্ন নিয়ে সকলের কাছে সহযোগিতা নিয়ে ঢাকায় কোচিংয়ে ভর্তি করে দেওয়া হয় আশা আক্তারকে। পরবর্তীতে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮৭৬ নম্বর মেধা তালিকায় ভর্তি হওয়ার সুযোগ লাভ করেন আশা।

আশা মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে খবর শুনে গ্রামের মানুষ আনন্দে উল্লাসে মেতে উঠে। কিন্তু আশার মায়ের মুখে আনন্দের পরিবর্তে মেয়েকে ভর্তি করানো নিয়ে হতাশা ফুটে উঠে। পরে এলাকার মানুষের কাছে সাহায্য তুলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয় আশাকে। এছাড়া ইতোমধ্যে আশা’কে অনেক মানবসেবী ব্যক্তি সহযোগিতার জন্য আশ্বাস দিয়েছেন ও অনেকেই এগিয়ে এসেছেন।