Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
didar-pan
পানের খিলি তৈরি করছেন দোকানি দিদার হোসাইন। পাশে বিভিন্ন পানের খিলির নাম ও দাম

এক খিলি পানের দাম ৫৫০ টাকা শুনে আঁতকে উঠেছিলেন ক্রেতা ভদ্রলোক। কিন্তু ৪২ পদের আইটেমে ভরপুর সেই পান ঠোঁটের ফাঁকে গুঁজে দিতেই মুখ থেকে বেরোলো শুধু তিনটা শব্দ -‘আহ কি স্বাদ’! সম্প্রতি এই দৃশ্যটি ধরা পড়ে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতির বনপুকুর এলাকায় অবস্থিত ফোর সিজন হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লাগোয়া পানের দোকানে।

কক্সবাজারে যাওয়া আসার পথে যাত্রাবিরতির জন্য এই জায়গাটা অনেকদিন ধরেই বিখ্যাত। হোটেলে খাবার সেরে অনেকে ছুঁটেন পাশের পানের দোকানটিতে-এক খিলি পানের স্বাদে ডুব দিতে।

chardike-ad

আর খাওয়া দাওয়ার পরে এক খিলি পানের স্বাদ নেওয়া তো বাঙালির পুরনো অভ্যাস। খালি পানের স্বাদ ভালো না-হলেও চুন সুপারি মিশিয়ে দিলে বেশ জমে ‌যায় বিষয়টা। আর সেখানে যদি এক খিলি পানেই ৪২ পদের আইটেম জুড়িয়ে দেওয়া হয়। তাহলে তো কথায় নেই।

পাঁচ বাই পাঁচ হাতের ছোট্ট একটি দোকান।সামনে বাক্সবন্দী হরেক রকমের খিলি পান তৈরির সামগ্রী। সেই দোকানে হাঁটু গেড়ে বসে গভীর মনোযোগে একটা খিলি পান তৈরি করছিলেন দোকানি পঞ্চাশোর্ধ্ব দিদার হোসাইন।

সেখানে দাঁড়িয়ে এক পশলা কথা হয় দিদারের সঙ্গে। তিনি জানান, মহেশখালী সহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মিষ্টি পান কিনে এনে এখানে বিক্রি করেন তিনি। এছাড়া পানের সঙ্গে ব্যবহার করা নানা সামগ্রী দেশের বিভিন্ন জায়গা ছাড়াও বিদেশ থেকেও আনা হয়।

didar
পান কিনছেন এক ক্রেতা

এই দোকানে মোট ১৩ রকমের পানের খিলি পাওয়া যায়। সর্বনিম্ম ১৫টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫৫০ টাকা প্রতি খিলি পানের দাম। এর মধ্যে পানে জর্দার (বাংলা) দাম ১৫ টাকা, পানে মুসকান ২৫ টাকা, পানে লাহরি ৩৫ টাকা, পানে বানারসি ৪৫টাকা, স্বাদে খুসবু ৪৫টাকা, ডাইবেটিকস পান ৫৫ টাকা, পানে সায়েদাবাদ ৬৫টাকা, পানে জর্দা (ইন্ডিয়ান) ৭০টাকা, পানে দিলখুস ৯০ টাকা, পানে করাচি ১১০টাকা, পানে লাখনো ২০০টাকা, মোঘল শাহী পান ৪৫০টাকা এবং কারিশমা এ ফোর সিজন ৫৫০টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে সেই দোকানে।

এসব পানে মোরব্বা, চমন বাহার, খেজুর, তানশিন, খোরমা, তেরেঙ্গা,গুন্তি, তবক, এলাচ, ইমাম, শ্রীকান্ত, নারিকেল, কিসমিস, সেমাই, স্লাচ, ঝুড়া, জাফরানসহ নানা সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে।

এক খিলি পানের দাম ৫৫০টাকা হওয়ার কারণ কী?-এমন প্রশ্নে দিদার হোসাইনের সাফ জবাব-‘প্রচুর খরচ পড়ে এই পানের খিলি তৈরিতে। বিশেষ করে এই পানের খিলিতে জাফরান ফল ব্যবহার করি। এই ফলের দামই তো অনেক।’

পর্যটন মৌসুমে পানের খিলি বিক্রি করে ভালোই ব্যবসা হয় দিদার হোসাইনের। দিদার হোসাইনের ভাষায়, ‘আমার ব্যবসাটা মৌসুমভিত্তিক। পর্যটন মৌসুমে প্রচুর লোক যাত্রাবিরতি করে এখানে। যতো মানুষ আসে, ততোই ব্যবসা।’

‘অনেকে আসেন এক খিলি পান নিজে খেয়ে স্বাদ উপভোগ করে নিয়ে যেতে চান স্বজনদের জন্য। কিন্তু পান তো পচনশীল জিনিস। তাই নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না।’ আফসোস ঝরে দিদার হোসাইনের কণ্ঠে। ক্রেতারাও নিশ্চয় আফসোস নিয়েই ফেরেন

লেখক: তাসনীম হাসান, সৌজন্যে: বাংলানিউজ