১৯৬ রানের লক্ষ্য। টি-টোয়েন্টিতে অবশ্যই অনেক বড় একটি টার্গেট। এই টার্গেট তাড়া করতে নামার আগেই ম্যাচ হেরে বসার কথা; কিন্তু নতুন অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে দল আগেই হেরে বসেনি। লড়াই করেছে। এক সময় তো দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে সমান তালেই লড়াই করে জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল।
কিন্তু বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য। আন্দিল পেহলুকাইয়োর বলে এলবির জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। টি-টোয়েন্টিতে নতুন নিয়ম, রিভিউ থাকতে হবে। সেই রিভিউর সুবিধাটা নিয়ে নিল প্রোটিয়ারা। শেষ পর্যন্ত আম্পায়ার নিজের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য হলেন।
আউট হয়ে গেলেন সৌম্য সরকার। ৩১ বলে ৪৭ রানের ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছিলেন ৫টি বাউন্ডারি আর ২টি ছক্কায়। সৌম্য যতক্ষণ উইকেটে ছিলেন, ততক্ষণ বাংলাদেশের জয়ের উজ্জ্বল সম্ভাবনা ছিল; ৯.১ ওভারে বাংলাদেশের রান যখন ৯২, তখনই আউট হয়ে গেলেন সৌম্য।
এরপরই মূলত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। পরের ব্যাটসম্যানদের কিছু দায়িত্বজ্ঞানহীন শট ম্যাচে পুরোপুরি বাংলাদেশকে ডুবিয়েছে। তবুও তরুণ সাইফউদ্দিনের ২৭ বলে হার না মানা ৩৯ রানের ইনিংসটির কল্যাণে শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে পেরেছে বাংলাদেশ। অলআউট হওয়া থেকে তো বেঁচেছে। উপরন্তু বাংলাদেশ গিয়ে থেমেছে ১৭৫ রানে। বাংলাদেশের পরাজয় শেষ পর্যন্ত ২০ রানে।
পুরো সফরে বলতে গেলে এই একটি ম্যাচেই খানিকটা লড়াই করতে পেরেছে বাংলাদেশ। হারলেও খুব বাজেভাবে হারতে হয়নি। তবুও এই হারের পর প্রশ্ন জেগেছে ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে। চারজন পেসার খেলানোর যৌক্তিকতা কী? যেখানে ব্যাটিং উইকেট। প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানরা পেসারদের ভালো খেলে, সেখানে কেন চার পেসার নিয়ে খেলার বিলাসিতা করতে হলো? আখেরে কী লাভ হলো চার পেসার খেলিয়ে?
১৯৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সৌম্য আর ইমরুল দারুণ সূচনা করলেন। তাদের দু’জনের ৪৩ রানের জুটিটা ছিল চমৎকার। ইমরুলকে কিছুটা সংগ্রাম করতে দেখা গেল। বেশিক্ষণ টিকতেও পারলেন না। ১১ বল খেলে ১০ রান করে উইকেট দিয়ে এলেন। তিন নম্বরে নামার কথা সাব্বিরের। নামলেন অধিনায়ক সাকিব। তিনি এসে বোলারদের ব্যস্ত রাখতে চাইলেন সবগুলো বলকেই খেলার লোভ দেখিয়ে। মারমুখি হয়েও উঠেছিলেন। কিন্তু রবি ফ্রিলিঙ্কের একটি লুজ বল খেলার আর লোভ সামলাতে না পেরে আকাশে বল তুলে দিলেন। ফলশ্রুতিতে ক্যাচ।
সৌম্য সরকার দারুণ হাতখুলে খেলছিলেন। কিন্তু পারলেন না দুর্ভাগ্যের সামনে টিকতে। রিভিউতে আউট হলেন। এরপর মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ আর সাব্বির রহমানরা আসলেন আর গেলেন। বড় ইনিংস খেলতে পারলেন না কেউ। শেষ দিকে সাইফউদ্দিনই যা একটু প্রতিরোধ গড়েছিলেন। তার প্রতিরোধ পরাজয় এড়ানোর জন্য যথেষ্ট না হলেও ব্যবধান কমাল।