২০ রানে পড়ে গিয়েছিলো পাঁচ উইকেট। সবগুলোই নিয়েছেন মাত্র দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামা ওসমান খান শেনওয়ারি। মাত্র ১৭ বলের মধ্যে তিনি তুলে নেন পাঁচ উইকেট। বাঁহাতি এই পেসারের ভয়ানক এই স্পেলের পরও পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কা তুলেছে ১০৩ রান। ২৬ ওভার দুই বলেই গুটিয়ে গেছে তারা। এক সময় তো তাদের ওয়ানডে ইতিহাসের সবচেয়ে কম রানে গুটিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিলো।
ইনিংসের প্রথম ওভারের পঞ্চম বলেই উইকেট পান ওসমান। তুলে নেন সাদিরা সামারাবিক্রমাকে। ওসমানের বল ইনসুইংগারে ঢুকে যাচ্ছিলো ভিতরের দিকে। অফ সাইডে বলটা ঠেলে দিতে গিয়ে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হন সামারাবিক্রমা। ঠিক পরের বলে ওসমানের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন লঙ্কান অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমাল। উইকেটরক্ষক সরফরাজ আহমেদের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি।
তৃতীয় ওভারের তিন নম্বর বলে আবার লঙ্কান ব্যাটিং লাইন কাঁপিয়ে দেন ওসমান। এবার ব্যাট-প্যাডে ফাঁক গলে তার বল উড়িয়ে দেয় উপুল থারাঙ্গার মিডল স্ট্যাম্প। আট রানের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে বসে শ্রীলঙ্কা।
এক বল পর, তৃতীয় ওভারে পঞ্চম বলে ওসমানের চতুর্থ শিকার হন নিরোশান দিকবেলা। এবারও ইনসুইংগারে ব্যাটসম্যানকে বোকা বানান তিনি। ওসমানের ভয়ানক স্পেল শেষ হয় মিলিন্দা সিরিবর্ধনাকে দিয়ে। তাকে ফখর জামানের ক্যাচে পরিণত করেন তিনি। ১৭ বলের মধ্যে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে লঙ্কানদেরকে ওয়ানডের সবচেয়ে কম রানে গুটিয়ে দেয়ার পথটা পরিস্কার করে ফেলেছিলেন ওসমান।
কিন্তু ষষ্ট উইকেটে লাহিরু থিরিমান্নে ও সেকুগে প্রসন্ন ২৯ রানের জুটি গড়ে সেই লজ্জা থেকে দলকে বাঁচান। তারপরও লঙ্কানরা পুঁজি পেয়ে সর্বসাকুল্যে ১০৩ রানের। অর্থাৎ হোয়াইটওয়াশ হওয়া ঠেকাতে তাদের সামনে আসলে খুব বেশি কিছু করার নেই আর।
লঙ্কানদের এই পরিণতির মূলে যে ওসমান খান, তা নিশ্চয় বলে দেয়ার দরকার নেই। গত দেড় দশকে এ রকম ভয়নাক পেস বোলিং স্পেল বিশ্ব কমই দেখেছে।
২০০৩ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে মাত্র ১৬ বলের মধ্যে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন চামিন্দা ভাস। আজ লঙ্কান এই পেসারের স্মৃতিই যেনো ফিরিয়ে আনলেন ওসমান। তাও লঙ্কানদেরই বিপক্ষে। এর মাঝখানে হল্যান্ডের বোলার ফন ডার গুগটেন কানাডার পাঁচ ব্যাটসম্যানকে বিদায় করেছিলেন ১৯ বলের মধ্যে। হাসান আলির পর পাকিস্তান যে আরো একজন ভয়ঙ্কর পেসার পেয়ে গেলো, এটা নিশ্চয় এতক্ষণে জেনে গেছে বিশ্ব।