যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতার হওয়া বাংলাদেশি জাকিরের মুক্তি মেলেনি গত চার মাসেও। যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলস কারাগারে রয়েছেন তিনি। দু’দফা জাকিরের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন সে দেশের আদালত। এ বছরের ২১ জুন রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে গিয়ে গ্রেফতার হন জাকির (৪০)। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে বসবাস করলেও তার বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না। ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে যু্ক্তরাষ্ট্র গিয়ে তিনি আর দেশে ফেরেননি। গত চার মাসেও তার মু্ক্তি না হওয়ায় আশাহত হয়ে ভেঙে পড়েছেন তার স্বজনরা। দেশে সন্তানের মুক্তির আশায় দিন গুনছেন তার ৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধা মা মাহফুজা খাতুন। জাকিরের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার পতেঙ্গা উপজেলার ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ পতেঙ্গা নাজিরপাড়ায়।
জাকিরের স্ত্রী জাহানারা জানান, তার স্বামী পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন। বিদেশ থেকে পাঠানো টাকায় তাদের সংসার চলত। বর্তমানে তিন শিশুপুত্র ও শাশুড়িকে নিয়ে নিদারুণ কষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছেন স্ত্রী জাহানারা। জাকিরের তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে আশ্রাফুল ইসলাম রিজভী (১৫) নবম শ্রেণিতে, মেঝ ছেলে আরিফুল ইসলাম রবিন (১০) চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে। ছোট ছেলে আশিকুল ইসলাম রিসাতের বয়স দুই বছর। টাকার অভাবে সন্তানদের পড়াশোনা বন্ধপ্রায়। সংসারও চলছে না।
জাহানারা তার স্বামীর মুক্তিতে সহায়তার জন্য বাংলাদেশ সরকারসহ লস অ্যাঞ্জেলসে বসবাসরত বাংলাদেশিদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। লস অ্যাঞ্জেলসে কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহা জানান, আটক বাংলাদেশির মুক্তির ব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়া চলছে। জাকিরের পক্ষে মামলা পরিচালনা করছেন জেরিমি আর ফ্রোস্ট। তিনি জানিয়েছেন আগামী ৫ ডিসেম্বর আদালতে দায়ের করা জাকিরের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হবে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে বৈধ কাগজপত্রবিহীন ১১ বাংলাদেশিকে পুলিশ গ্রেফতার করে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। এছাড়াও অবৈধদের বিরুদ্ধে পুলিশি ধরপাকড় ছাড়িয়েছে অতীতের সব রেকর্ড। ট্রাম্প প্রশাসনের খড়গে যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ কাগজপত্রবিহীন বসবাসকারীরা এখন চরম আতঙ্কে রয়েছেন। জাগো নিউজ