কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) পেয়ে নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলেন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার আলোচিত মেয়র আবু তাহের। নামাজের সময় লক্ষ্মীপুর পৌর শহরে সকল দোকান-পাট বন্ধের নির্দেশ তিনি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। একই সাথে গতকাল মঙ্গলবার শোকজের জবাব দাখিল এবং নামাজের সময় দোকান খোলা থাকবে বলে মাইকিং করা হয়।
এ ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে সর্বত্র চলছে আলোচনা-সমালোচনা। জেলা প্রশাসক কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র আবু তাহেরের নির্দেশে গত রবিবার পৌর শহর এলাকার নামাজের সময় সকল দোকান-পাট বন্ধ রাখার জন্য মাইকে প্রচারণা চালানো হয়।
এ ঘোষণার পর সোমবার নামাজের সময় বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়। সোমবার আছরের আজানের পর চকবাজার এলাকার হিন্দু মালিকানাধীন বধুয়া বস্ত্রালয় থেকে তিন নারী ক্রেতাকে বের করে দিয়ে অতি উৎসাহি এক যুবক শাটার লাগিয়ে দেয়। এ সময় প্রতিষ্ঠানের ভেতরে আরো দুই নারী কেনাকাটা করছিল। এতে ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়।
এ ঘটনার পর জেলা প্রশাসক (ডিসি) হোমায়রা বেগম উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গত সোমবার রাতে মেয়র আবু তাহেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। পরে মঙ্গলবার শোকজের জবাব দাখিল এবং নামাজের সময় দোকান খোলা থাকবে বলে মাইকিং করা হয়। এ সময় মেয়রের বরাত দিয়ে মাইকিংয়ে বলা হয়, নামাজের সময় দোকান-পাট বন্ধ রাখার প্রয়োজন নেই। ব্যাক্তি উদ্যোগে নামাজ আদায় করলেই হবে।
লক্ষ্মীপুর বণিক সমিতির সহ-সভাপতি আজিজুর রহমান মঙ্গলবার শহরের চক বাজার জামে মসজিদে নামাজ আদায় করেন। নামাজের এক পর্যায়ে তিনি মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে মাইকে বলেন, নামাজের সময় দোকান-পাট বন্ধের নির্দেশ একটি ভালো উদ্যোগ ছিল। তবে পৌরসভার মেয়র বলেছেন, আজ (মঙ্গলবার) থেকে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার বাধ্যবাধকতা নেই।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) হোমায়রা বেগম গণমাধ্যমকর্মীদের জানায়, নামাজের সময় দোকান পাট বন্ধের নির্দেশ দেয়ায় পৌরসভার মেয়রকে কারণ দর্শনোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। ওই নোটিশের জবাবে মেয়র তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। সেখানে দোকান খোলা রাখার জন্য মাইকিং করার কথাও উল্লেখ করা হয়।
নোটিশের জবাবে মেয়র জানান, চকবাজার জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি হিসেবে তিনি কমিটির সদস্যদের অনুরোধে নামাজের সময় দোকান-পাট বন্ধ রাখার জন্য ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেছেন। এব্যাপারে কাউকে জোর জবরদস্তি করা হয়নি বলেও জবাবে উল্লেখ করা হয়। কালের কণ্ঠ