পাকিস্তানের বিপক্ষে লড়াকু খেলার লক্ষ্যের কথা বলেছিলেন জিমিরা; কিন্তু ঘরের মাঠের এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে দেখা গেল অসহায় এক বাংলাদেশকে। বুধবার মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপ হকিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ৭-০ গোলে হেরেছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়ে থাকা তিনবারের চ্যাম্পিয়নরা দ্বিতীয়ার্ধে করে আরও ৬ গোল। এর মধ্যে তৃতীয় ও শেষ কোয়ার্টারে ৩টি গোল করে পাকিস্তান।
দ্বিতীয় মিনিটেই পাকিস্তানের পক্ষে পেনাল্টি কর্নারে বাঁশি বাজিয়েছিলেন আম্পায়ার। আম্পায়ারের ওই সিদ্ধান্তের রিভিউ নিয়ে সফল হয় বাংলাদেশ। প্রথম কোয়ার্টারে ওই একবারই বাংলাদেশের রক্ষণভাগে আতঙ্ক ছড়াতে পেরেছিল তিনবারের চ্যাম্পিয়নরা।
তবে দ্বিতীয় কোয়ার্টারের শুরু থেকেই বাংলাদেশ সীমানায় প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করে পাকিস্তান। ১৭ ও ১৮ মিনিটে দুটি পেনাল্টি কর্নার আদায় করে দ্বিতীয়টিতে সফল হয় ইরফান মোহাম্মদরা। রেজওয়ান মোহাম্মদের পুশ থেকে আবু মাহমুদ গোল করেন। ২০ মিনিটে আম্পায়ার আরও একবার পাকিস্তানের পক্ষে পেনাল্টি কর্নারের বাঁশি বাজালে বাংলাদেশ রিভিউ নিয়ে সফল হয়।
বাংলাদেশ প্রথম পরিকল্পিত একটি আক্রমণ তৈরি করে ২২ মিনিটে। অধিনায়ক জিমি ডান দিক দিয়ে ঢুকে বল দিয়েছিলেন পোস্টের সামনে থাকা মিলনের উদ্দেশ্যে। কিন্তু মিলন স্টিক-বলে সংযোগ ঘটাতে না পারায় ম্যাচে ফেরা হয়নি স্বাগতিকদের।
২৪ মিনিটে দ্বিতীয়বার বাংলাদেশের জালে বল পাঠিয়ে গোল উৎসব করে পাকিস্তান; কিন্তু গোলটি বৈধ ছিল না বলে দুই আম্পায়ার আলোচনা করে বাতিল করেন।
ভাগ্য বিড়ম্বনা না করলে ২৮ মিনিটে ম্যাচে ফিরতে পারত লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। প্রায় মাঝ মাঠ থেকে বল নিয়ে অধিনায়ক জিমি দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দুর্দান্ত হিট নিলেও তা ফিরে আসে পোস্টে লেগে।
এক গোলের ভরসা নেই। ২৮ মিনিটে জিমির গোলটি হয়ে গেলে চাপেই পড়তে হতো পাকিস্তানকে। এজন্যই বিরতির পর নুন-আদা খেয়ে নামে রিজওয়ান-কাদিররা। বাংলাদেশের রক্ষণ-দেয়াল ভেঙে দুই মিনিটের মধ্যে ১-০ থেকে ব্যবধান বানিয়ে ফেলে ৩-০। ৩৩ মিনিটে পেনাল্টি স্ট্রোক থেকে শাকিল ভাট এবং পরের মিনিটে শান আলীর পাস থেকে মোহাম্মদ কাদির গোল করে ম্যাচটা নিজেদের করে নেয় তিনবারের এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়নরা।
তৃতীয় কোয়ার্টারে পাকিস্তান একচেটিয়া প্রধান্য বিস্তার করে খেলে। ৪১ মিনিটে ব্যবধান ৪-০ করে অতিথি দলটি। পেনাল্টি থেকে গোলের হালি পূরণ করেন পাকিস্তানের আবু মাহমুদ।
৪৭ মিনিটে উমর ভাটের পাস থেকে শাকিল ভাট ব্যবধান ৫-০ করেন। ৫০ মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে আবু মোহাম্মদ করেন পাকিস্তানের ষষ্ঠ গোল।
হারের ব্যবধান ৭-০ হয় শেষ মিনিটে। ৫৮ মিনিটে পর পর দুটি পেনাল্টি কর্নার আদায় করে পাকিস্তান গোল না পেলেও শেষ মিনিটে মোহাম্মদ কাদির বাংলাদেশের দাঁড়িয়ে যাওয়া ডিফেন্সের মাঝ দিয়ে গোল করেন।
পুরো ম্যাচে পাকিস্তানে ভুরি ভুরি পেনাল্টি কর্নার আদায় করলেও বাংলাদেশ কোনো পেনাল্টি কর্নার আদায় করতে পারেনি।