Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

north-korea-missileমিসরের উপকূল থেকে অস্ত্রবোঝাই উত্তর কোরিয়ার একটি জাহাজ আটক করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। জিয়ে শুন নামের জাহাজটিতে ৩০ হাজারেরও বেশি রকেটচালিত গ্রেনেড পাওয়া গেছে। জাহাজটি উত্তর কোরিয়ার হলেও কম্বোডিয়ার পতাকার রঙে রঞ্জিত ছিল। ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, চলতি বছরের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র মিসরের কর্তৃপক্ষকে জাহাজটির ব্যাপারে হুশিয়ারি দিয়ে জানায়, একটি রহস্যজনক জাহাজ সুয়েজ খালের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

জাতিসংঘের এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার ইতিহাসে আটক হওয়া এটাই সবচেয়ে বড় ধরনের অস্ত্র চালান।’ এর আগে ২০১৩ সালে পানামা চ্যানেলে উত্তর কোরিয়ার একটি অস্ত্রভর্তি জাহাজ আটক করে পানামা কর্তৃপক্ষ। জাতিসংঘের তদন্তে আরও বলা হয়েছে, মিসরই বিশাল এই অস্ত্রের ক্রেতা। মিসরের ব্যবসায়ীরা দেশটির সেনাবাহিনীর জন্য উত্তর কোরিয়ার অস্ত্রের জন্য কয়েক মিলিয়ন ডলারের অস্ত্রক্রয়াদেশ দেয়। তবে মার্কিন কর্মকর্তা ও পশ্চিমা কূটনীতিকদের মতে, অস্ত্রসম্পর্কিত লেনদেন তারা গোপন রাখতে চেয়েছিল।

chardike-ad

যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, পিয়ংইয়ংয়ের কাছ থেকে নিষিদ্ধ সামরিক সরঞ্জম ক্রয়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মিসর। উত্তর কোরিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রসহ জাতিসংঘ বেশ কয়েকটি অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এমন প্রেক্ষাপটে, বিশ্বব্যাপী অস্ত্র ব্যবসা দেশটির নেতা কিম জং উনের সরকারের আর্থিক ভিত্তির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপায়ে পরিণত হয়েছে বলে জাতিসংঘ তদন্তে প্রতিবেদনে আলোকপাত করা হয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জাহাজটি শনাক্ত করার পর কায়রোকে জানায় এবং কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সতর্ক করে। শেষ পর্যন্ত মিসরীয় কর্তৃপক্ষ জাহাজটি আটকের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, গোপনে অস্ত্রক্রয়ের জন্য মিসর যে চুক্তি করেছিল জিয়ে শুন জাহাজের অস্ত্র সেগুলোর অন্যতম। ওই গোপন অস্ত্র চুক্তিগুলোর কারণেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সম্প্রতি মিসরে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা আটকে দেয়। আটককৃত অস্ত্রের মূল্য ২৩ মিলিয়ন ডলার বলে জানা গেছে। তবে উত্তর কোরিয়াকে এই মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে কিনা তা পরিষ্কার নয়।

এদিকে এ অস্ত্রের জাহাজ আটক হওয়ার ঘটনা কিম জং উন এরই মধ্যে আর্থিক চাপের মধ্যে রয়েছেন, সেটাকে আরও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিল বলে মনে করা হচ্ছে। পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি এগিয়ে নেয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোর পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে কিম জং উন প্রচলিত অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি সচল রাখার চেষ্টা করছেন। বিশ্লেষকদের মতে, এক্ষেত্রে তিনি, ইরান, মিয়ানমার, কিউবা, সিরিয়া, ইরিত্রিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে অন্যতম মিত্র মিসর এবং কমপক্ষে দুটো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে বেছে নিয়েছেন।