সোমবার বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য একটি অন্ধকার দিন কেটেছে। প্রায় ১০ বছর পর কোনো টেস্ট ম্যাচের যে কোন ইনিংসে নূন্যতম ১০০ রানের নিচে অলআউট হয়েছে টাইগাররা। আর এ ঘটনার পরপরই ক্রিকেটারদের নিয়ে শুরু হয়েছে নানা সমালোচনা। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্রিকেটারদের পারফরমেন্স নিয়ে অনেকেই বাজে মন্তব্য করছেন।
একটি ইনিংসে বাজে পারফরমেন্সের জন্য ব্যক্তিগত আক্রমণ করে সমালোচনা করাকে কোনভাবেই মানতে পারছেন না বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। ব্যক্তিগত আক্রমণ না করে গঠনমূলক সমালোচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন। মাশরাফি এই আহ্বান জানানোর মধ্য দিয়ে সমালোচকদের জানিয়ে দিয়েছেন যে, এই টেস্ট খেলোয়াড়ররাই কিছুদিন আগে ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়ার মতো দলকে উড়িয়ে দিয়ে দেশের জন্য ঐতিহাসিক বিজয় নিয়ে এসেছিলেন।
মঙ্গলবার মিরপুরে মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারক কোম্পানি লাভার সেরা কর্মীদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাশরাফি। ওই অনুষ্ঠানে ঘুরে ফিরে পচেফস্ট্রুম টেস্টের কথা উঠলে মাশরাফি সবার কাছে অনুরোধ করেন সঠিক ক্রিকেট বিশ্লেষণ করে তবেই যেন সমালোচনা করা হয়। তিনি বলেন, ‘যারা খেলেছে তারা আমাদের-আপনাদের থেকেও বেশি হতাশ। একটা ঘটনা ঘটে গেছে, আর এখানেই তো শেষ না। সামনে ম্যাচ আছে। এই দলটাই তো কিছুদিন আগে টেস্ট ম্যাচ জিতে আমাদের আনন্দ দিয়েছে।’
ভক্তরা একটা ইনিংস দেখে ভেঙ্গে পড়েছে এবং কঠোর সমালোচনা করছে। তাই ভক্তদের উদ্দেশ্যে বেশ বুঝিয়ে এবং যুক্তি দিয়ে ম্যাশ বলেছেন, ‘চারটা দিন যে ছেলেরা লড়াই করেছে সেটা কিন্তু আমরা কেউ বলছি না। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে কিছু না কিছু ভুল না করলে ইনিংসটা এমনভাবে ভেঙে পড়তো না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি ঘরে বসে এটুকু বিশ্লেষণ না করতে পারি যে, দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশন কেমন? অস্ট্রেলিয়া দলতো বাংলাদেশে এসে তিন দিনে হেরে গেছে। যদি এটা এনালাইসিস না করি শুধু জয় আর হারটাই দেখি তবে কিভাবে হবে? বাংলাদেশে এসে, বিশেষ করে উপমহাদেশের বাইরের দল এসে তাদের এমন ঘটছে।’
মাশরাফি বেশ নমনীয় কণ্ঠে ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘এটা বুঝতে হবে যে, দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশন কি, তাদের (খেলোয়াড়দের) কিসের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। এটা যদি বুঝতে না পারি তাহলে আমার মনে হয় ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা করা ঠিক না’
মাশরাফির বিশ্বাস, ব্লমফন্টেইনে ৬ তারিখ শুরু হতে যাওয়া দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে। তাই সবার প্রতি মাশরাফির আহ্বান দলকে অনুপ্রাণিত করার। এখান থেকে বসে আরও ভালো কথা কিভাবে বলা যায়, তাদের নিয়ে ইতিবাচক কিছু বলা যায় সে চেষ্টাটা করা উচিত।