বিগত একযুগ ধরে বাংলাদেশ বিমানের হিসাব শাখায় বদলি কার্যক্রম বন্ধ। সুপারভাইজার ও অফিসার পদে বেশিরভাগ জনবল ঘাঁটি গেড়ে আছে ১০/১২ বছর ধরে। এছাড়া শাখার নিচের পদগুলোতে চলছে জনবল সংকট। সিনিয়র পদের জনবল দিয়ে করানো হচ্ছে নিচের পদের জনবলের কাজ। অভিযোগ উঠেছে, একই জায়গায় দীর্ঘদিন থাকায় অনেকে সিন্ডিকেট গড়ে তোলার পাশাপাশি হয়েছেন বিশাল বিত্ত-বৈভবের মালিক।
বিমানের হিসাব শাখার একই চেয়ারে দীর্ঘসময় পড়ে থাকার বিষয়টি অস্বীকার না করে কন্ট্রলার এ এস এম মনজুর ইমাম বলেন, জনবল সংকটের কথা। তিনি বলেন, হিসাব শাখার প্রায় প্রতিটি পদে বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তোলা হয়। দীর্ঘদিন নিয়োগ বন্ধ থাকায় দক্ষ কর্মীদের সরালে তার বিকল্প খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই নিরূপায় হয়েই আমরা বদলি করতে পারছি না।
নিয়ম অনুযায়ী একজন বিমানকর্মী একই স্টেশনে ১৪ মাস থেকে সর্বোচ্চ তিন বছর থাকতে পারেন। বিমানের নিয়ম অনুযায়ী কখনও এর বেশি থাকার সুযোগ নেই। কিন্তু নিয়ম অমান্য করে একই স্টেশনে কর্মরত আছেন হিসাব বিভাগের দুই ডজনেরও বেশি কর্মী।
বিমানের চলমান ডমেস্টিক স্টেশন সাতটি। এগুলো হচ্ছে— সিলেট, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাজশাহী, সৈয়দপুর, যশোর ও বরিশাল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হিসাব বিভাগের একাউন্টস সুপারভাইজার মো. আমজাদ হোসেন (পি নং- ৩৭৯২), তিনি ১০ বছর আগে চট্রগ্রামে বদলি হয়েছেন। এখনো আছেন বহাল তবিয়তে। একই স্টেশনের একাউন্টস সুপারভাইজার সুপর্ণা রায় (পি নং- ৩৭৯৫) আছেন ১৩ বছর ধরে। একাউন্টস সুপারভাইজার কাজি মাসুদুল হাসান (পি নং- ৩৭৯৮) আছেন ৯ বছর ধরে। প্রশাসনিক ভবনে কর্মরত একাউন্টস সুপারভাইজার মোসাম্মৎ আফরোজা মোস্তফা (পি নং- ৩৭১১১)। তিনি চাকরিতে যোগদানকালীন থেকে রয়েছেন একই জায়গায়। একাউন্টস সুপারভাইজার কবির আহমেদ (পি নং-৩৭১১৩ ) দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বসে আছেন কক্সবাজার স্টেশনে। জনবল সংকটের কারণে জুনিয়র একাউন্টস অফিসার জালাল আহমেদ (জি নং-৫০৯৪৮) কে এই স্টেশনে পাঠানো হয় একাউন্টস সুপারভাইজার হিসেবে।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ম্যানেজার পদ থেকে পদোন্নতি পেয়ে ডিজিএম (ফান্ড) হলেও এখনও ম্যানেজার পদেই খাটাচ্ছেন সায়মা রহমান নামে এক (পি নং-৩৬৩৫০) নারী কর্মকর্তাকে। এমন অসংখ্য অনিয়ম দানা বেঁধেছে বিমানের হিসাব শাখায়।
দীর্ঘদিন একই স্টেশনে কর্মরত থাকার পরও কেন তাদের বদলি করা হচ্ছে না জানতে চাইলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অর্থ বিভাগের কন্ট্রলার এ এস এম মনজুর ইমাম বলেন, জনবল সঙ্কট কাটিয়ে না উঠতে পারলে এ অবস্থা থেকেও উত্তরণ সম্ভব নয়। জাগো নিউজ