বাংলাদেশের পেসার মোস্তাফিজ ১৬ ওভার, শফিউল ১৫ ওভার, তাসকিন ১৫ ওভার, স্পিনার মিরাজ ৩৬ ওভার, মাহমুদুল্লাহ ২ ওভার, মুমিনুল ২ ওভার আর সাব্বির ৪ ওভার বল করেছেন। হতাশার দিনে কোনো বোলারই একটি উইকেটও তুলে নিতে পারেননি।
এলগার ১২৮ রানে অপরাজিত। এটি তার টেস্ট ক্যারিয়ারের নবম সেঞ্চুরি। উইকেটে অপরাজিত আছেন হাশিম আমলা (৬৮)। এই জুটি ১০২ রান তুলে অবিচ্ছিন্ন। প্রথম সেশনে ৯৯ রান তুলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় সেশনেও উঠেছে ঠিক ৯৯ রান। শেষ সেশনে আরও ১০০ রান। এলগার ২৮৫ বলে ৯টি চার আর দুটি ছক্কার সাহায্যে তার ইনিংসটি সাজিয়েছেন। আর আমলার ১০৩ বলের ইনিংসে বাউন্ডারি ৭টি, ওভার বাউন্ডারি একটি। ১০৮ নম্বর টেস্ট খেলতে নেমে তিনি ১৪তম ছক্কা হাঁকিয়ে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন।
প্রোটিয়াদের ওপেনিংয়ে জুটি গড়তে নামেন অভিষিক্ত এইডেন মার্কারাম এবং ডিন এলগার। মার্কারামের সঙ্গে টেস্ট অভিষেক হয় বোলিং অলরাউন্ডার আন্দিল পেহলুকওয়ের। আস্থার প্রতিদান দিতেই দলে এসেছিলেন মার্কারাম। অভিষেক ম্যাচেই নিজের নামের প্রতি সুবিচার করেন তিনি। অভিষেক ইনিংসেই তরুণ ওপেনার অর্ধশতক হাঁকান। তবে, প্রথম সেশনেই তার উইকেটের স্বাদ নিতে পারতো সফরকারীরা। তাসকিনের বলে মোস্তাফিজের হাতে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান এইডেন মার্কারাম। দলীয় ১৯৬ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। অভিষেক ম্যাচেই দুর্দান্ত ব্যাট করা মার্কারাম ফেরেন ৯৭ রান করে। মুমিনুল-মেহেদির প্রচেষ্টায় রান আউট হওয়ার আগে মার্কারাম ১৫২ বল খেলে ১৩টি চারের সাহায্যে তার ইনিংসটি সাজান। সেই ওভারেই দ্বিতীয় সেশনের খেলা শেষ হয়।
৪০ টেস্টে এলগার নবম সেঞ্চুরির দেখা পান। চলতি বছরে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে চতুর্থ সেঞ্চুরি হাঁকান তিনি। ব্যক্তিগত ৮৫ রানের মাথায় ভারতের তারকা চেতশ্বর পুজারাকে ছাড়িয়ে চলতি বছর সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড গড়েন তিনি। ৮ টেস্ট পুজারার রান ৮৫১। পুজারাকে ছাড়িয়ে যেতে এলগারের লাগলো দশটি টেস্ট।
দীর্ঘ নয় বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট খেলতে নামে বাংলাদেশ। পচেফস্ট্রুমে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির নতুন নিয়মের মধ্যদিয়ে শুরু হয় ম্যাচটি। ক্রিকেটে ‘লাল কার্ড’র পাশাপাশি নতুন নিয়মে পরিবর্তন হয়েছে কোড অব কনডাক্ট, ডিআরএস-এর ব্যবহার, ব্যাটের সাইজ, মাঠে ফিল্ডারদের সীমাবদ্ধতা আর খেলোয়াড়দের আচরণের বিধিনিষেধ। এই সিরিজের শেষে আটে ওঠার সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশের। দুই ম্যাচেই ড্র অথবা একটি ম্যাচে জয় ও অন্যটিতে পরাজয়ে প্রথমবারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হটিয়ে এগিয়ে যাওয়ার হাতছানি রয়েছে টাইগার শিবিরে। মোট কথা সিরিজে না হারলেই ক্যারিবীয়দের টপকাবে বাংলাদেশ।
সাদা পোশাকে বাংলাদেশ ও দ. আফ্রিকা এখন পর্যন্ত দশবার মুখোমুখি হয়েছে। তবে কোনোবারই জয়ের মুখ দেখেনি বাংলাদেশ। দুটি টেস্ট অবশ্য ড্র হয়েছে। কিন্তু সেটিও বৃষ্টির কল্যাণে। বাকি ৮ টেস্টেই জয় পেয়েছে প্রোটিয়ারা। পচেফস্ট্রুমের সেনউইস পার্কে টেস্ট ইতিহাসের এটি দ্বিতীয় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সর্বশেষ ২০০২ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষেই টেস্ট অভিষেক হয়েছিল ভেন্যুটির। বাংলাদেশের এই দলের মোট তিন জনের এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের অভিজ্ঞতা ছিল। এরা হলেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম, ওপেনার তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস। ২০০৮ সালে ছিল সেই সফরটি।
বাংলাদেশের একাদশ: তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, মমিনুল হক, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক), লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), সাব্বির রহমান, মেহেদি হাসান মিরাজ, শফিউল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান।
দক্ষিণ আফ্রিকা: ডিন এলগার, এইডেন মার্কারাম, হাশিম আমলা, তেম্বা বাভুমা, ফাফ ডু প্লেসিস (অধিনায়ক), কুইন্টন ডি কক (উইকেটরক্ষক), আন্দিল পেহলুকওয়ে, কেশব মাহারাজ, কাগিসো রাবাদা, মরনে মরকেল, ডুয়েন অলিভিয়ার।