টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর একে একে কেটে গেল ১৭টি বছর। কৈশোর-তারুণ্য পেরিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটে এখন টগবগে যুবক। যার প্রমাণ ইতিমধ্যেই ক্রিকেটের মাঠে রাখতে শুরু করেছে টাইগাররা। বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে নামার আগে এখন প্রতিটি শক্তিশালী দলও হিসাব-নিকাশ করে মাঠে নামে। বাংলাদেশকে এখন আর এক ফুৎকারে উড়িয়ে দেয়ার স্বপ্ন দেখে না কেউ।
এর মধ্যে বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকা এ নিয়ে সফর করছে তৃতীয়বার। সর্বশেষ ২০০৮ সালে। এবং সর্বপ্রথম ২০০২ সালে। টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার দুই বছরের মধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট খেলগে গিয়েছিল টাইগার বাহিনী। সেবার দুটি এবং সর্বশেষ ২০০৮ সালে দুটি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। চার টেস্টেই বাংলাদেশের পারফরম্যান্স খুব হতাশাজনক, ইনিংস ব্যাবধানে পরাজয়।
২০০৮ সালের পর কোনো এক অজ্ঞাত কারণে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। সর্বশেষ ২০১৫ সালে এসেছে টেস্ট খেলার জন্য। সেবার ছিল পূর্ণাঙ্গ সিরিজ। ৩ ম্যাচের ওয়ানডেতে ২-১ ব্যবধানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথমবারেরমত সিরিজ হারিয়েছে বাংলাদেশ। ২ টেস্ট ম্যাচের সিরিজটি ড্র হয়েছে বৃষ্টির কারণে।
আইসিসি এফটিপি অনুযায়ী এবার বাংলাদেশ গেল দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। ২০০৮ সালে সর্বশেষ মোহাম্মদ আশরাফুলের নেতৃত্বে খেলার পর এবার মুশফিকুর রহীমের নেতৃত্বে বাংলাদেশ গেল আফ্রিকার সবচেয়ে উন্নত এই দেশটিতে। টেস্ট ক্রিকেটে যারা কিছুদিন আগেও ছিল শীর্ষস্থানে। বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
পচেফস্ট্রমের এই টেস্টের আগে বেনোনির উইলোমোর পার্ক স্টেডিয়ামে তিনদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকা আমন্ত্রিত একাদশের বিপক্ষে এই ম্যাচে বাংলাদেশ ভালোই ব্যাটিং অনুশীলন করেছে। ইমরুল কায়েস, মুমিনুল, মুশফিক, সাব্বিররা হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। সাব্বির তো দুই ইনিংসেই হাফ সেঞ্চুরি করেছেন।
তবে শঙ্কা দেখা দিয়েছে মূলতঃ তামিম ইকবাল এবং সৌম্য সরকারকে নিয়ে। এই দু’জনই পড়েছেন ইনজুরিতে। উরুর ইনজুরিতে তামিম এবং হাতের ইনজুরিতে সৌম্য। যদিও বাংলাদেশ দলের ফিজিও থিহান চন্দ্রমোহন জানিয়েছেন, এই দু’জনই খেলতে পারবেন প্রথম টেস্টে। শেষ পর্যন্ত যদি তারা খেলতে পারেন তো, সেটাই হবে অনেক বড় পাওয়া।
বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে গ্রায়েম স্মিথই ছিলেন সবচেয়ে বেশি বিধ্বংসী। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৮ টেস্টে সর্বোচ্চ ৭৪৩ রান করেছেন তিনি। যার মধ্যে রয়েছে ৩টি সেঞ্চুরি। ১টি হাফ সেঞ্চুরি। ২০০৮ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ২৩২ রানের ইনিংস খেলেন স্মিথ। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৫ ম্যাচে ২টি হাফ সেঞ্চুরিসহ মোট ৩০১ রান করেন হাবিবুল বাশার সুমন।
বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী হলেন মাখায়া এনটিনি। ৮ ম্যাচে সর্বোচ্চ ৩৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে ৪ ম্যাচে সর্বোচ্চ ১৫ উইকেট নিয়েছেন শাহাদাত হোসেন রাজীব। তবে দুই দলের মধ্যে সবচেয়ে বিধ্বংসী বোলিং করেছেন শাহাদাত। ২০০৮ সালে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ২৭ রান দিয়ে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।
তবে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর তরতাজা স্মৃতি নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছে বাংলাদেশ। সুতরাং, বাংলাদেশ যে নতুন উদ্যমে মাঠে নামবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।