মিরসরাইয়ের দুর্গম পাহাড়ে সন্ধান মিলেছে একটি সুড়ঙ্গের। প্রায় ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের এ সুড়ঙ্গটি নির্জন পাহাড়ে বিশেষ কায়দায় খনন করা হয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। শত শত উত্সুক লোক করেরহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ অলিনগর গ্রামের ঢুল্লাছরি এলাকায় সন্ধান পাওয়া সুড়ঙ্গটি দেখতে ভিড় করছে। মঙ্গলবার বিকালে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ ও সরকারের দুইটি গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই, ডিজিএফআই) কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কদিন আগেও অলিনগর বনবিটের আওতায় থাকা ঢুল্লাছরির পাহাড়গুলো জঙ্গলে আবৃত ছিল। সম্প্রতি সরকারের বনবিভাগ নতুন বনায়নের জন্যে পরিস্কারের কাজ শুরু করলে এখানকার পাহাড়গুলো ন্যাড়া হয়ে পড়ে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর জঙ্গল পরিস্কারের কাজ করতে গিয়ে বিশেষ কায়দায় খোঁড়া সুড়ঙ্গটি দেখতে পান স্থানীয় দক্ষিণ অলিনগর গ্রামের বাসিন্দা মঞ্জুর আলম। গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকালে মঞ্জুর তার বন্ধুদের নিয়ে পুনরায় দেখতে যান ওই সুড়ঙ্গ। পরবর্তীতে ২৬ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে সুড়ঙ্গের ছবি দিলে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সাংবাদিকসহ স্থানীয় লোকজন সুড়ঙ্গটি দেখতে ভিড় জমান।
সুড়ঙ্গের ভেতর ঘুরে আসা নেছার আহমদ বলেন, সুড়ঙ্গের ভেতর আরো দু’টি সুড়ঙ্গ দেখা গেছে। আমি সুড়ঙ্গে প্রবেশের সময় প্রায় ৮০ হাতের একটি পাহাড়ি লতা নিয়ে যাই। ৭০ হাত পর্যন্ত যাওয়ার পর আর ভেতরে যেতে পারিনি। ওখানে সুড়ঙ্গের মুখে মাটি দিয়ে ভরাট করে দেয়া হয়েছে। মাটিগুলো সরানো গেলে আরো ভেতরে যাওয়া সম্ভব হবে। সুড়ঙ্গের ভেতর অনায়াশে দু’জন হামাগুড়ি দিয়ে যেতে পারবে। সুড়ঙ্গের মুখ দিয়ে ১০-১৫ হাত ভেতরে যাওয়ার পর দু’পাশে আরো দুইটি সুড়ঙ্গ দেখা গেছে। সুড়ঙ্গের ভেতর ১০-১২ হাত পরপর ৪-৫ জন বসে কথা বলার মতো প্রশস্ত জায়গা আছে। সুড়ঙ্গের ভেতরে দু’পাশে এমনভাবে মাটি কাটা হয়েছে মনে হয় ধারালো খন্তা (মাটির কাটার যন্ত্র) ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া মাটিতে বালি ও কয়লা দেখা গেছে।
মঙ্গলবার বিকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় হাজারো লোক সুড়ঙ্গটি দেখতে সেখানে ভিড় করছেন। স্থানীয় মানুষের মনে সুড়ঙ্গটি নিয়ে আতঙ্গ বিরাজ করছে।
মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ থানার ওসি জাহিদুল কবিরের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বললে তিনি বলেন, ‘এতে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নেই। বিষয়টি জানার পর আমাদের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।’