নামাজ ইসলামের অন্যতম দ্বিতীয় রোকন। ঈমানের পরপরই নামাজ পড়া মানুষের জন্য আবশ্যক করা হয়েছে। আর নামাজই একমাত্র ইবাদত যা ইসলাম এবং কুফরের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়কারী। এ জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ছেড়ে দেয়া কুফরি।
আল্লাহ তাআলা মানুষকে যথা সময়ে নামাজের ব্যাপারে নির্দেশ প্রদান করেছেন। মানুষ যদি নামাজের ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কোনো কারণে নামাজ আদায় করতে না পারে এবং নামাজের সময় চলে যায় তবে তাকে ঐ নামাজ কাজা আদায় করতে হয়। নির্ধারিত সময়ের পরে আগের ওয়াক্তের নামাজ আদায় করাকে ‘কাজা’ বলা হয়।
কাজা নামাজ আদায়ে করণীয়: নির্ধারিত সময়ের নামাজ ওয়াক্ত চলে যাওয়ার পর আদায়ের অনুমতি ইসলামি শরিয়তে থাকলেও ইচ্ছাকৃত নামাজ কাজা করা কবিরা গোনাহ। সুতরাং ওজরবশত নির্ধারিত সময়ে নামাজ আদায় করতে না পারলে পরবর্তীতে তা আদায় করে নেয়া জরুরি। কাজা নামাজ আদায়ের রয়েছে কিছু করণীয়-
>> ফরজ নামাজ নির্ধারিত সময়ে আদায় যেমন ফরজ; তেমিনি কাজা আদায়ের ক্ষেত্রেও তা ফরজ হিসেবে আদায় করতে হবে।
>> আবার ওয়াজিব নামাজ নির্ধারিত সময়ে যেমন ওয়াজিব ছিল; তা কাজা আদায়ের সময়ও ওয়াজিব থাকবে। যেমন বিতর নামাজের কাজা আদায় করাও ওয়াজিব।
>> মানুষ যদি নির্ধারিত সময়ে কোনো নামাজ আদায় করার মানত বা নিয়ত করে আর নির্ধারিত সময়ে ঐ নামাজ আদায় করতে না পারে তবে তা পরবর্তীতে আদায় করা ওয়াজিব।
>> নফলের নিয়তে নামাজ আদায় করা শুরু করলে ঐ নামাজ যদি কোনো কারণে নষ্ট হয়ে যায় এবং নামাজ ছেড়ে দেয়। আর ঐ সময় এ নাফল নামাজ আদায় না করে তবে পরবর্তীতে ঐ নামাজের কাজা করাও ওয়াজিব।
>> যে নামাজের প্রতি তাগিদ প্রদান করা হয়েছে এবং প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আদায় করেছেন সে নামাজকে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা বলা হয়।
যেমন- ফজরের ফরজের আগে ২ রাকাআত; জোহরের আগে ৪ রাকাআত এবং পরে ২ রাকাআত; মাগরিবের পরে ২ রাকাআত; ইশার নামাজের পরে ২ রাকাআত।
হাদিসে এ সব নামাজের প্রতি অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এ সব নামাজের কাজা করার ইচ্ছা পোষণ করলে নির্ধারিত ওয়াক্তের পরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগেই তা আদায় করতে হবে।
যেমন- ফজরের নামাজের সময় অতিবাহিত হওয়ার পর জোহরের আগেই তা আদায় করতে হবে। যদি জোহরের নামাজের ওয়াক্ত অতিবাহিত হয় তবে শুধু ফজরের ফরজ নামাজের কাজা আদায় করবে। সুন্নাতের কাজা পড়তে হবে না। এভাবে অন্যান্য ওয়াক্তের সুন্নাত নামাজেরও একই হুকুম।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নির্ধারিত সময়ে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। ওজরবশত ওয়াক্ত চলে গেলেও যখনই ওজর থেকে মুক্ত হওয়া যায় তখনই নামাজের কাজা করা আবশ্যক। তাই নির্ধারিত সময়ের ফওত হয়ে যাওয়া নামাজ অতিদ্রুত কাজা হিসেবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।