মিয়ানমারে উৎপীড়নের হাত থেকে রোহিঙ্গাদের রক্ষায় জাতিসংঘে পাঁচটি প্রস্তাব তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে এই মানবিক সঙ্কট অবসানে তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়ের দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করেছেন। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানিয়েছেন। খবর এএফপির।
প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মিয়ানমারে ফেরত নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘এই লোকগুলো যেন অবশ্যই নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে পারে ।’
রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারে ‘সেইফ জোন’ গঠনের প্রস্তাব তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে। এছাড়া জাতিসংঘ মহাসচিবকে সেখানে একটি অনুসন্ধানী দল পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফেরত ঠেকাতে বাংলাদেশ সীমান্তে স্থল মাইন পুঁতে রাখছে। রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাতিসংঘকে একটি সমাধান বের করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও দাবি জানান তিনি।
রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তার পাঁচটি প্রস্তাব তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে, অনতিবিলম্বে ও চিরতরে মিয়ানমারে সহিংসতা ও ‘জাতিগত নিধন’ নিঃশর্তে বন্ধ করা, অনতিবিলম্বে মিয়ানমারে জাতিসংঘ মহাসচিবের নিজস্ব একটি অনুসন্ধানী দল প্রেরণ , জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান করা এবং এ লক্ষ্যে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সুরক্ষা বলয় গড়ে তোলা। রাখাইন রাজ্য থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত সকল রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে তাদের নিজ ঘরবাড়িতে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন নিশ্চিত এবং কফি আনান কমিশনের সুপারিশমালার নিঃশর্ত, পূর্ণ ও দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত কথাও বলা হয়েছে এই প্রস্তাবে।
গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইনের কয়েকটি পুলিশ ও সেনা চৌকিতে হামলা চালায় রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা। এরপরই সেখানে রোহিঙ্গা নিধন অভিযানে নামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। ২৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত ৪ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।