জিসিএসই পরীক্ষায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হৃদিতা খান প্রবাসে ভালো ফলাফলের মাধ্যমে সাফল্যের শীর্ষে উঠে এসেছেন। কথায় আছে, প্রতিভা কখনও চাপা রাখা যায় না। আগুনের মতো যেখানে থাকুক না কেন জ্বলে উঠবেই।
হোক দেশ বা বিদেশ আপন মহিমায় উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। ঠিক তেমনি একজন বাংলাদেশি তরুণী হৃদিতা খান চলতি বছর লন্ডন একাডেমি থেকে জিসিএসই-২০১৭ পরীক্ষায় মেধা তালিকায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন।
সে ৯টি এ স্টার, ১টি এ ডাবল স্টার, দুটি এ পেয়ে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেন। গত বছর একই একাডেমি থেকে বছরের সেরা স্কুল ছাত্রী হিসেবে গৌরবের সঙ্গে শিরোপা অর্জন করে। প্রতিটি বিষয়ই তার ব্যাপক সাফল্য। এ অর্জন তাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটি সহজ দ্বার উন্মোচিত করে।
ফলে সাফল্য যেন বার বার তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকে। কিন্তু এই হাতছানি দিয়ে ডাকার পেছনে রয়েছে বহুমুখী প্রতিভার খণ্ড খণ্ড অর্জন। যা তাকে পৌঁছে দেয় সাফল্যের শিখরে। হৃদিতা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াও সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে একই একাডেমি থেকে প্রথম শিরোপা অর্জন করেন।
খেলাধুলা, গান-বাজনা, পড়াশোনা প্রতিটি ক্ষেত্রেই চমক দেখিয়েছেন শিশুকাল থেকেই। হৃদিতা ইতালির রোমে ২০০১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করে। তিন বোনের মধ্যে সে সবার বড়। বাবার ভালোবাসা আর মায়ের স্নেহ-মমতায় বেড়ে উঠেছে মুসলিম পরিবারে।
শৈশব কেটেছে রোম শহরে, সেখানেও সে খেলাধুলা ও সঙ্গীত চর্চা অব্যাহত রেখে বিভিন্ন টেলিভিশনে সঙ্গীত পরিবেশন করে সবার মন জয় করতে সক্ষম হয়েছে। এর ফলে স্কুলেও তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। বরাবরই ভালো রেজাল্ট করে শিক্ষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
একই স্কুলে তার আরও দুটি বোন পড়াশোনা করছে আয়শা ও ফাতিমা । তারাও বোনের মতো ভালো পড়াশোনা করে স্কুলে খ্যাতি অর্জন করে। বাবা আমিন খান তিনিও একজন সঙ্গীত শিল্পী। বিভিন্ন টেলিভিশনে গান পরিবেশন করে বাঙালির হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন।
মূলত বাবার আদর্শ নিয়েই তার এ পথচলা। সঙ্গীত জগতে বাবা আমিন খান তাকে হাতেখড়ি দেয়। তিনিই শিক্ষা গুরু, ধীরে ধীরে মেয়েকে একজন বড় শিল্পী হিসেবে গড়ে তুলেছেন। চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ ২০১৬ (ইউকে) প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার্স আপ বিজয়ের মাধ্যমে শিরোপা অর্জন করে। ইংল্যান্ডসহ সর্বইউরোপে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।
প্রবাসের মাটিতে বেড়ে উঠলেও তার চিন্তা-চেতনা জুড়ে রয়েছে দেশের প্রতি গভীর ভালোবাসা। তারই উজ্জ্বল স্বাক্ষর বহন করে দেশীয় সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে বিদেশের মাটিতেও বাঙালি সংস্কৃতি নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে হৃদিতা খান।
হৃদিতা একদিন বিশ্বসমাজের আলোকিত মানুষ হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে চান। বিশ্বমঞ্চে বিজয়ী পতাকা হাতে দাঁড়াবে সেটাই এখন অপেক্ষমাণ।