বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) পঞ্চম আসর এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যখন অন্তত দুটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের সঙ্গে সময়-সূচির সংঘর্ষ বাধবে। একটি দক্ষিণ আফ্রিকার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগ এবং অন্যটি পাকিস্তানের ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপ। হঠাৎ করে ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপের সূচি ঘোষণার কারণে আগামী নভেম্বরে বিপিএল কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগে পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা অংশ নিতে পারবে কি না তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) খুব কঠিন শর্ত আরোপ করে রেখেছে দেশটির ক্রিকেটারদের ওপর। ঘরোয়া ক্রিকেটের অঙ্গীকারই সবার আগে পূরণ করতে হবে। ক্রিকেটারদের তারা জানিয়ে দিয়েছে, আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টগুলোতে খেলার আগে ঘরোয়া ক্রিকেটের টুর্নামেন্টগুলোই তাদের কাছে অগ্রাধিকার পাবে। একই সময়ে তিনটি টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে, পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা বিপিএল কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগ খেলতে পারার সম্ভাবনাই তৈরি হয়েছে।
খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টগুলো থেকে ক্রিকেটারদের ফিরিয়ে নেয়ার ঘটনা দ্বিতীয়বারেরমত ঘটালো পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। মাত্র কয়েকদিন আগেই (গত মাসে) পিসিবি ১৩জন ক্রিকেটারের অনাপত্তিপত্র ফিরিয়ে নেয়। তাদেরকে দেশে ফেরত আসার নির্দেশ দেয়। যে কারণে ইংলিশ কাউন্টি ক্রিকেট এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজে চলমান সিপিএল ছেড়ে আসার জন্য নির্দেশ দেয়া হয় জাতীয় পর্যায়ের ওইসব ক্রিকেটারকে।
এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা তৈরি হয় খোদ পাকিস্তানের ভেতরেই। ২৫ আগস্ট থেকে ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল তখন। তবে সব মিলিয়ে পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্ট এই পরিস্থিতিকে ‘জগাখিচুড়ি’ আখ্যা দিলে পিসিবির নতুন চেয়ারম্যান নাজম শেঠি ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপকে নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিতের ঘোষণা দেন। ফলে ওই ১৩ ক্রিকেটার নতুন করে আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি রক্ষার সুযোগ পান।
এবার আবার নতুন করে পাকিস্তানের ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। ৪ নভেম্বর থেকে এই টুর্নামেন্ট চলবে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত। পুরো টুর্নামেন্টটাই সংঘর্ষ তৈরি করেছে বিপিএল এবং দক্ষিণ আফ্রিকার গ্লোবালা টি-টোয়েন্টি লিগের সঙ্গে।
বিপিএল শুরু হওয়ার কথা ২ নভেম্বর। শেষ হওয়ার কথা ১০ ডিসেম্বর। একই সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট শুরু হবে ৩ নভেম্বর এবং শেষ হওয়ার কথা ১৬ ডিসেম্বর।
ইএসপিএন ক্রিকইনফোর পক্ষ থেকে পিসিবির কাছে এই সাংঘর্ষিক সময়সূচির বিষয়টা তুলে ধরা হয়েছিল। পিসিবির মুখপাত্র জানিয়ে দেন, পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের অবশ্যই সবার আগে তাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের দাবি মেটাতে হবে। সাতজন পাকিস্তানি ক্রিকেটার দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলার নিশ্চয়তা দিয়েছেন। তারা হলেন, ওয়াহাব রিয়াজ, উমর আকমল, মোহাম্মদ নওয়াজ, ফাখর জামান, মোহাম্মদ হাফিজ, আনোয়ার আলি, ইমাদ ওয়াসিম। তারা কয়েকটি ফ্রাঞ্চাইজির সঙ্গে চুক্তিও সেরে ফেলেছে। আর শহিদ আফ্রিদি এবং জুনায়েদ খানই শুধুমাত্র বিপিএলে খেলবেন বলে এখনও পর্যন্ত ঘোষণা দিয়েছেন।
এ সম্পর্কে ক্রিকইনফোকে বিপিএলে সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক বলেন, ‘আমরা এখনও পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কিংবা অনানুষ্ঠানিক কিছুই শুনিনি। যদি সেটাই হয়, তাহলে তা হবে ক্রিকেটার এবং বিপিএলের জন্য বড় লস। তবে আমরা আত্মবিশ্বাসী। পাকিস্তানিরা না আসলেও আমরা বিপিএল আয়োজন করতে পারবো। কারণ, অনেক বিদেশি ক্রিকেটার রয়েছেন। তাদেরকে পাকিস্তানিদের জায়গায় রিপ্লেস করতে পারবো।’