প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে ১২৬টি অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে। সম্প্রতি দুদক সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অভিযোগ নেওয়ার জন্য হটলাইন চালু করেছে। এই হটলাইন চালুর সঙ্গে সঙ্গেই অসংখ্য মানুষ অভিযোগ জানাতে থাকে দুদকে। কিন্তু দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, ‘অভিযোগ গুলোর কোয়ালিটি ভালো না। কোয়ালিটি অভিযোগের সংখ্যা খুবই কম।
এসব অভিযোগের মধ্যে কমবেশি ১২৬টি অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে। অভিযোগ গুলো সবই প্রধান বিচারপতি হবার আগে সংগঠিত। অভিযোগ গুলোর মধ্যে দুদকের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগও রয়েছে। রয়েছে বিচারধীন মামলায় পক্ষপাতদুষ্টতার অভিযোগ, পক্ষপাতমূলকভাবে জামিন দেওয়ার অভিযোগ।
দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, এর মধ্যে কয়েকটি অভিযোগ সুনির্দিষ্ট আর্থিক লেনদেন বিষয়ে।
দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, হটলাইনে যেকোনো অভিযোগ পেলে তা প্রথমে লিপিবদ্ধ করা হয়। তারপর কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা দেখেন, অভিযোগগুলো সুনির্দিষ্ট এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনের মধ্যে পড়ে কি না? যদি এসব অভিযোগের ন্যূনতম গ্রহণযোগ্যতা থাকে তাহলেই প্রাথমিক তদন্তের জন্য অভিযোগ গুলো বিবেচিত হয়। প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে সেগুলো সবেমাত্র লিপিবদ্ধ হয়েছে। এখন এগুলোর নির্দিষ্টকরণ নিরীক্ষা করা হচ্ছে। নিরীক্ষায় যদি এমন অভিযোগ পাওয়া যায় যে তার মেরিট আছে তাহলে দুদক অবশ্যই তদন্ত করবে বলে দুদকের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
দেশের প্রধান বিচারপতি বিরুদ্ধে এরকম তদন্ত কতটা আইনসম্মত জানতে চাইলে দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ‘একমাত্র মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে সংবিধান দায়মুক্তি দিয়েছে। আর কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তা তদন্ত করা আমাদের আইনগত দায়িত্ব।’ তবে এ ধরনের ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে যে সব আইনি প্রক্রিয়া তা পুর্বানুমতি নিতে হয়, তা গ্রহণ করেই দুদক এগুবে বলে জানা গেছে।
তবে, একজন সিনিয়র আইনজীবী ঘটনাটিকে ‘নজিরবিহীন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে, অন্য একজন আইনজীবী বলেছেন, ‘ প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ নতুন নয়। ওয়ান-ইলেভেনের সময়ও তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উলেছিল। এজন্য পদত্যাগের চাপও ছিল তাঁর ওপর। এ সময় বিচারপতি সিনহাকে বঙ্গভবনে চায়ের অমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।’