বয়স ও নাম জটিলতায় মালয়েশিয়ায় প্রায় দেড় লাখ বাংলাদেশির বৈধতা প্রাপ্তিতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। দেশটিতে বসবাসরত অবৈধ বাংলাদেশিরা চলমান রি-হিয়ারিং প্রক্রিয়ায় বৈধ হওয়ার প্রকল্পের আওতায় যারা রেজিস্ট্রেশন করেছেন তাদের মধ্যে বয়স জটিলতা দেখা দিয়েছে। এ জটিলতা নিরসন না হলে প্রায় দেড় লাখ বাংলাদেশি বৈধতা প্রাপ্তি থেকে বাদ পড়বেন বলে দেশটির অভিবাসন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে বয়স জটিলতা নিরসনে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে শত শত বাংলাদেশিরা প্রতিদিন আসছেন। কিন্তু সঠিক কোনো সমাধান না পেয়ে অনেকে ফিরে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে দূতালয় প্রধান ওয়াহিদা আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আবেদনকারীরাই বয়স জটিলতা সৃষ্টি করেছেন। পুরাতন পাসপোর্টে এক বয়স আর নতুন পাসপোর্টে আরেক বয়স। কাউন্টারে এসে যে তথ্যাদি উপস্থাপন করা হয় সে অনুপাতে পাসপোর্ট আবেদন জমা নেয়া হয়। মালয়েশিয়া থেকে যখন আবেদনটি দেশে পাঠানো হয় তখন দেখা যায় এক ব্যক্তির বিভিন্ন নাম এবং বয়স বাড়িয়ে কমিয়ে আরও একটি পাসপোর্ট করেছেন।
শুধু তাই নয়, মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশনে যখন নতুন পাসপোর্ট নিয়ে যাওয়া হয় ফিঙ্গারিং দেয়ার জন্য তখন দেখা যায় ব্যক্তির নাম ঠিক আছে কিন্তু জন্ম তারিখ ঠিক নেই। নতুন পাসপোর্টে জন্ম তারিখ ৩৮ বছর আর পুরাতন পাসপোর্টে জন্ম তারিখ ৪৮ বছর।
মালয়েশিয়া সরকার কর্তৃক অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোনো এজেন্ট বা দালালের মাধ্যমে রি-হিয়ারিং না করতে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ হাইকমিশন। তবে যারা ই-কার্ড পেয়েছেন তাদের পাসপোর্ট না থাকলে শ্রমিকদের বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে পাসপোর্ট নিতে হবে এবং চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে রি-হিয়ারিংয়ের কাজ শেষ করতে হবে।
হাইকমিশন সূত্রে জানা গেছে, ‘গত ফেব্রুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ই-কার্ডের (এনফোর্সমেন্ট) মাধ্যমে ৯২ হাজার ৭৯১ জন অবৈধ বাংলাদেশি নিবন্ধিত হয়েছেন এবং ই-কার্ড পেয়েছেন। ই-কার্ড এর মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি। ই-কার্ড নিবন্ধনের সময়সীমা ৩০ জুন শেষ হলেও রি-হিয়ারিং প্রক্রিয়া চালু রয়েছে। এ প্রক্রিয়া চলবে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এ প্রক্রিয়ায় এ পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি রেজিস্ট্রেশন করেছেন। এসব কর্মীদের বৈধকরণ প্রক্রিয়ার আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে অবশ্যই মেয়াদ সংবলিত পাসপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়েছে। এ সময়ে যাদের নিয়োগ হবে না, তাদের নিজ নিজ দেশে ফিরতে হবে।