সৌদির হাত থেকে হজ ব্যবস্থাপনা আন্তর্জাতিকিকরণের দাবি জানিয়েছে কাতার। দেশটির এমন দাবিকে সৌদির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে উল্লেখ করেছেন সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদেল বিন আহমেদ আল জুবেইর।
আল জুবেইর বলেন, ‘পবিত্র নগরীতে হজ ব্যবস্থাপনার আন্তর্জাতিকিকরণের ক্ষেত্রে যে কোনো দলীয় কাজে জবাব দেয়ার অধিকার আমাদের আছে। তিনি আরো বলেন হজ যাত্রীদের সুযোগ সুবিধা প্রদানে সৌদির ইতিহাস সবারই জানা।’
শনিবার কাতারের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বলেছে, কাতারের নাগরিকরা শুধু দু’টি বিমানবন্দর দিয়ে সৌদিতে প্রবেশ করতে পারছেন। তবে এজন্য তাদের অবশ্যই দোহা হয়ে যেতে হচ্ছে। যারা কাতারের বাইরে বসবাস করেন, হজ করতে চাইলে তাদের প্রথমে কাতারে ফিরতে হবে। পরে সেখান থেকে সরাসরি সৌদি আসতে হবে। ফলে যেসব নাগরিক দেশের বাইরে থাকেন তাদের জন্য এটা দুঃসাধ্য হয়ে উঠবে।
মানবাধিকার কমিশনের দাবি, হজ নিয়ে রাজনীতি করে মূলত সৌদি আরব ও তার সহযোগীরা নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ আদায় করতে চাইছে।
সৌদি আরব হজের রাজনীতিকরণ করছে বলেও অভিযোগ করেছে কাতার। তবে নিজেদের নাগরিকদের হজ পালন থেকে বিরত রাখতেই কাতার এ ধরনের মন্তব্য করছে বলে উল্লেখ করেছেন সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সন্ত্রাসীদের অর্থায়ন ও সমর্থনের কারণেই আরব বিশ্বের চার দেশ কাতারের ওপর নিষেধাজ্ঞা এনেছে বলে নিশ্চিত করেন আল জুবেইর। তিনি বলেন, কাতারের এমন কর্মকাণ্ড অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়েও প্রভাব ফেলছে এবং হিংসাত্বক প্রচারণা ছড়িয়ে দিচ্ছে।
কাতারের সঙ্গে ইরানের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে আল জুবেইর বলেন, ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার পরিণতি ভোগ করছে কাতার। কিন্তু আমাদের মনে হয় না যে কাতারের লোকজন তাদের দেশে ইরানের নীতি মেনে নেবে।
তিনি বলেন, কায়রোর বৈঠকে ঘোষণা হওয়া ছয় নীতি বাস্তবায়নের ভিত্তিতে কাতারের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত আছে চার দেশ।
আল জুবেইর বলেন, কাতার সব বিষয়েই কথা বলে। কিন্তু সন্ত্রাসীদের অর্থায়ন, উস্কানি দেয়া, পুলিশের তালিকায় থাকা ওয়ান্টেড সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয়া এবং অন্যদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো বন্ধ করছে না তারা।
এদিকে বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেইখ খালিদ বিন আহমেদ বিন মোহাম্মেদ আল খালিফা বলেছেন, কাতারের সঙ্গে আলোচনা করতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে চার দেশ।
যৌথ সামরিক অনুশীলন ছাড়াও সব ক্ষেত্রেই মিসরের সঙ্গে বাহরাইনের পারস্পরিক সহযোগিতার প্রশংসা করেছেন তিনি। বাহরাইনের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ সুকরীও প্রশংসা করেছেন।
তিনি বলেন, এই সামরিক সহযোগিতা দেশের বিশেষ করে বাহরাইন এবং মিসরের নিরাপত্তা বজায় রাখবে। ১৩ দাবী এবং ছয় নীতি মেনে নিলেই কাতারের সঙ্গে আলোচনা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।