বাতিল হলো দেশের সবচেয়ে পুরোনো মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেলের লাইসেন্স। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম এই মোবাইল ফোন অপারেটেরটির কফিনে শেষ পেরেক পড়ল।
গত সপ্তাহে অপারেটরটির লাইসেন্স বাতিলে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন সংক্রান্ত ফাইল বিটিআরসিতে এসে পৌঁছায়। আর আজ সোমবার টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসির কমিশন বৈঠকে অপারেটরটির লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
জানা গেছে চলতি সপ্তাহেই একটি গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে এই লাইসেন্স বাতিলের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর মাধ্যমে দেশে সিটিসেল অধ্যায়ের শেষ হবে।
জুনের প্রথম দিকে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন দেশের সবচেয়ে পুরোনো মোবাইল ফোন অপারেটরটির লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করে সরকারের কাছে।
এদিকে এর ফলে দেশে মোবাইল ফোন অপারেটরের সংখ্যা একটি কমলেও ফোরজি নীতিমালায় নতুন একটি অপারেটর আসার সুযোগ রেখেছে সরকার।
মূলত বকেয়া পরিশোধ না করা; আদালতের নির্দেশ অনুসারে স্পেকট্রাম এবং লাইসেন্স ফি পরিশোধ না করা এবং লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করার অভিযোগে সিটিসেলের লাইসেন্স বালিতের সুপারিশ করে বিটিআরসি।
এর আগে ২০১৬ সালের ২০ অক্টোবর সিটিসেলের স্পেকট্রাম বরাদ্দ স্থগিত করেছিল বিটিআরসি। তখন সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলে ৬ নভেম্বরে সিটিসেলের স্পেকট্রাম ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তবে এখন ওই কোম্পানির আর কোনো গ্রাহক নেই।
বিটিআরসি জানিয়েছে, ২০১৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সিটিসেলের কাছে মোট পাওনা ৪৭৭ কোটি টাকা বকেয়া ছিল। এর মধ্যে অপারেটরটি ২৫৫ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। অবশিষ্ট ২২২ কোটি পরিশোধ করলেই অপারেটরটি দায় মুক্ত হবে।
২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৭ সালের মার্চের মধ্যে সিটিসেলের পাওনা পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু যথা সময়ে তা পরিশোধ করেনি অপারেটরটি।
অন্যদিকে সিটিসেলের নামে এবি ব্যাংক থেকে নেওয়া ৩৫০ কোটি টাকা ঋণে অনিয়ম ও আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছে দুদক। রাজধানীর বনানী থানায় করা ওই মামলায় সিটিসেলের চেয়ারম্যান এম. মোরশেদ খান, তার স্ত্রী নাসরিন খান, সিটিসেলের এমডি, সিইও এবং এবি ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান এমডিসহ মোট ১৬ জনকে আসামি করা হয়। এতে গ্রেপ্তার হন সিটিসেল সিইও মেহবুব চৌধুরী; পরে জামিন পান তিনি।
এছাড়া ৪৫৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা পাওনা আদায়ে সিটিসেলের প্রধান কার্যালয় নিলামে তুলতে চেয়েছিল ন্যাশনাল ব্যাংক। রাজধানীর মহাখালিতে অবস্থিত ভবনটির ৬ষ্ঠ হতে ১৩ তলা পর্যন্ত নিলামে তোলার জন্য ব্যাংকটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে দরপত্রও আহ্বান করে। কিন্তু পরে বিষয়টি আর এগুতে দেখা যায়নি। এর মধ্যে বকেয়া বেতন-ভাতা আদায়ে সিটিসেলকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে এর কর্মীরা। অর্থসূচক