ফিক্সিংয়ের অভিশাপ থেকেই বের হতে পারছে না পাকিস্তান ক্রিকেট। একের পর এক ম্যাচ ফিক্সিং কিংবা স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে পড়ছেন দেশটির ক্রিকেটাররা। সর্বশেষ পিএসএলে ফিক্সিং করতে গিয়ে ইতিমধ্যে নিষিদ্ধ হয়েছেন কয়েকজন ক্রিকেটার। কয়েকজনের বিরুদ্ধে শক্ত অভিযোগ তোলা হয়েছে। এবার ফিক্সিংয়ের অভিযোগ তোলা হলো জাতীয় দলের দুই ক্রিকেটার উমর আকমল এবং মোহাম্মদ সামির বিরুদ্ধে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড ইতিমধ্যে তদন্তও শুরু করে দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
ইংল্যান্ডের ন্যাশানল ক্রাইম এজেন্সির এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে ফিক্সিং নিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন তিন সদস্যের দুর্নীতি দমন কমিশনের সামনে। এরপরেই পাকিস্তানি মিডিয়ায় খবর ফাঁস হয়েছে যে, সেই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এই দুই ক্রিকেটারের নাম জানিয়েছেন।
এই দুই ক্রিকেটারকে নিয়ে সন্দেহ আরও বেড়েছে, কারণ পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহরিয়র খান নিজে পাকিস্তানের একটি সংবাদপত্রে সামি এবং আকমলের নাম জানিয়েছেন। যদিও পাক ক্রিকেট বোর্ডের আইনি পরামর্শদাতা সালমান নাসির এ নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
এই দুই ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে কি না, তা-ও তিনি জানাননি। উল্টো তিনি বলেছেন, ‘আমি মিডিয়াসহ সকলকে অনুরোধ করব, নাম নেওয়া থেকে দূরে থাকতে।’ কিন্তু তাকে যখন জিজ্ঞেস করা হয় যে, ক্রাইম এজেন্সির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এই দু’জনের নাম জানিয়েছেন কি না, নাসির বলেন- ‘কোনও মন্তব্য করব না।’ অর্থাৎ, তিনি সেই সম্ভাবনা উড়িয়েও দেননি।
পাকিস্তানের ফাস্ট বোলার মোহাম্মদ সামি জাতীয় দল থেকে ব্রাত্য হয়ে পড়েন, কারণ বিভিন্ন দেশের টি-টোয়েন্টি লিগে তিনি খেলে বেড়ান; কিন্তু ফিক্সিং নিয়ে অভিযোগে তিনি প্রশ্নের মুখে পড়েছেন। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (সিপিএল) থেকে যেমন তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, ফিক্সিংয়ের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত চলছে কি না। উমর আকমল এখন লন্ডনে হাঁটুর চিকিৎসা করাতে গিয়েছেন। তাকেও একই প্রশ্ন করা হয়েছে বলে খবর।
মঙ্গলবার করাচি থেকে সংবাদসংস্থা পিটিআই বিশ্বস্ত সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ‘সামি খুবই হতাশ হয়ে পড়েছেন। তার কারণ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল), যেখানে তার খুব চাহিদা রয়েছে, সেখান থেকেও তাকে প্রশ্ন করা হচ্ছে।
পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি লিগে যে ফিক্সিংয়ের অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে তোলপাড় চলার মধ্যেই সামি এবং আকমলের নাম এসে পড়েছে। দুই ক্রিকেটার এখন চাইছেন, বোর্ড তাদের কলঙ্কমুক্ত করুক। কিন্তু পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড এখনও সে রকম কোনও অভিপ্রায় দেখায়নি। নাসির জামশেদ, শারজিল খান এবং মোহাম্মদ ইরফানের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রও জমা দেয়া হয়েছে।