এবার ড. জাকির নায়েকের পাসপোর্ট বাতিল করে দিয়েছে ভারত সরকার। মঙ্গলবার মুম্বাই আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এ বাতিল আদেশ দেয়। জঙ্গিদের অর্থায়নের অভিযোগে ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ’এর পক্ষ থেকে তাকে একাধিকবার সমন পাঠানো সত্বেও তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সামনে হাজিরা না দেওয়ায় এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গেছে।
চলতি মাসেই জাকিরকে শোকজ নোটিশ পাঠিয়ে ১৩ জুলাইয়ের মধ্যে ব্যাক্তিগত হাজিরার কথা বলা হয়েছিল এবং তার পাসপোর্ট কেন বাতিল করা হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছিল কিন্তু তার কোন উত্তরই দেননি জাকির নায়েক।
মঙ্গলবার এনআইএ’এর শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ‘জাকিরের পাসপোর্ট বাতিলের বিষয়ে এনআইএ’এর পক্ষ থেকে যে আর্জি জানানো হয়েছিল মুম্বাই আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস তাতে অনুমোদন দিয়েছে’।
এনআইএ’এর কাছ থেকে অনুরোধ আসার পর গত সপ্তাহেই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাকিরের পাসপোর্টটি বাতিল করার প্রক্রিয়া শুরু করে। এব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গোপাল বাগলে সেসময় জানিয়েছিলেন, ‘কয়েকদিন আগে তদন্তকারী এজেন্সির কাছ থেকে আমাদের কাছে জাকিরের পাসপোর্ট বাতিলের একটা অনুরোধ আসে। সেই অনুরোধের ভিত্তিতে আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ নিই’।
এর আগে ওই একই কারণে (ইডির সামনে হাজিরা না দেওয়ায়) জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা (অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট) জারি করা হয়। প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট (পিএমএলএ) আইনে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে নাইকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে মুম্বাইয়ে এনআইএ’এর বিশেষ আদালত।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের বাইরে অবস্থান করছেন এই ধর্ম প্রচারক। গত বছরের ১ জুলাই ঢাকার গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পরই জাকির নায়েকের নাম সামনে আসে। জানা যায়, হামলায় যুক্ত দুই জঙ্গি জাকিরের ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল। বিষয়টি সামনে আসার পরই জাকিরের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে ভারত সরকার। জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদের অর্থায়ন করা এবং অর্থ পাচারের অভিযোগে গত বছরের ১০ নভেম্বর আইআরএফ-কে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
আলফুল অ্যাক্টিভিটিস প্রিভেনশন অ্যাক্ট (ইউএপিএ) ধারায় অভিযোগ এনে জাকিরের এনজিও’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু গ্রেফতারি এড়াতে জাকির নায়েক (৫১) এই মুহূর্তে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন বলে খবর।
গত বছরের জানুয়ারিতে পাসপোর্টটি নবায়ন করেন জাকির, এর বৈধতা আছে আগামী ১০ বছর পর্যন্ত। জাকিরের সেই পাসপোর্টই বাতিল করা হল।