Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

mari-malekএই বিশ্রী কালো শিশুটি কে? কোত্থেকে এসেছে? যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ থেকে শরণার্থী হিসেবে ধনী দেশে পা দেওয়ার পর এমন কথা তাঁকে বহুবার শুনতে হয়েছে। এখন তিনি সুপারমডেল। তবে অতীতের সেই সব ভুলে যাননি। তাই তাঁর মতো শিশুদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার বিবিসির সঙ্গে এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে মারি মালেক নামে শরণার্থী থেকে সুপারমডেল হওয়া এক তরুণীর কথা।

মারি মালেক এক শিশু শরণার্থী হিসেবে সুদান থেকে এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। দক্ষিণ সুদানের যুদ্ধ তাঁকে শিশু অবস্থায় দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছিল। চার বছর শরণার্থীশিবিরে থাকার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি পান। এখন তিনি নিউইয়র্কভিত্তিক সুপারমডেল, অভিনেত্রী ও ডিজে। অনেক বাধা-বিপত্তি থাকা সত্ত্বেও তিনি ধীরে ধীরে সুপারমডেল হিসাবে সফল হন। এখন তাঁর সুপারমডেল মর্যাদা ব্যবহার করছেন দক্ষিণ সুদানের যুদ্ধকবলিত শিশুদের কল্যাণে।

chardike-ad

মারি মালেক বলেন, “যখন আমি দক্ষিণ সুদান থেকে আসি, তখন সেখানে দশকের পর দশক ধরে যুদ্ধ চলছিল। পরিস্থিতি ছিল খুব খারাপ। এখনো সেখানে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে মানুষ। শরণার্থী অবস্থায় আমাকে বলা হতো—এই কালো শিশুটি কে? কোত্থেকে এল? ইংরেজি জানা না থাকায় তাদের আমি নিজের সম্পর্কে কিছু জানাতে পারতাম না।’ নিজের মডেলজীবন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনি মডেল হয়ে যাওয়া মানেই কিন্তু এটা নয় যে আপনি ধনী হয়ে গেছেন। বিখ্যাত হয়ে গেছেন। আপনার জীবনের সবকিছুই এখন দারুণ। ব্যাপারটি মোটেও তা নয়। এটা অনেক কঠিন পরিশ্রমের পথ। আমি হয়তো এই শিল্পে অল্প কয়েকজন কালোর একজন।”

মারি তাঁর অতীত ভুলে যাননি। তিনি তাঁর দেশের যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষের কল্যাণে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। এই কাজ তাঁকে জাতিসংঘের সঙ্গে সম্পৃক্ত করেছে। বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট থাকাকালে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন মারি। তিনি দক্ষিণ সুদানে শিশুদের শিক্ষার জন্য অলাভজনক সংগঠন গড়ে তুলেছেন।

নিজের দেশের মানুষের দুর্ভোগের কথা বলতে গিয়ে একপর্যায়ে কেঁদে ফেলেন মারি। বলেন, “আমি যদি তাদের সবাইকে সাহায্য করতে পারতাম! কিন্তু আমি তা পারি না। শিশুদের এভাবে দুর্ভোগ পোহাতে দেখে আমার খুব কষ্ট হয়।”

তিনি জানান, দক্ষিণ সুদানে তাঁর কাজ যোগাযোগ তৈরি করছে। একজন ডিজে, অভিনেত্রী বা মডেল হিসেবে তিনি যা করেন, এর একটি উদ্দেশ্য থাকে। যোগাযোগের মধ্যেই থাকে একটি গল্প। যেখান থেকে তিনি এসেছেন, সেখানে তিনি এ কাজটিই করে যাচ্ছেন। তিনি শরণার্থীদের অনুপ্রেরণা দেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষ যাঁরা কঠিন সময় পার করছেন এবং ভাবছেন এখান থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব নয়, তিনি তাঁদের নিজের জীবনের গল্প শুনিয়ে উৎসাহ দেন।