নিজ দেশে কোণঠাঁসা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও প্রশাসন কাতার ইস্যু নিয়ে দ্বিমুখী অবস্থান নিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে কাতারকে একঘরে করার কৃতিত্ব নিয়েছেন ট্রাম্প। এরপর ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে কাতারের আমিরকে ফোন করেছেন, সংকট সমাধানের কথা বলেছেন।
এখানেই শেষ নয়, কাতার নিয়ে খেলে যাচ্ছেন ট্রাম্প। শুক্রবার কাতারের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘মানুষদের অন্যান্য মানুষকে হত্যা করা শেখানো বন্ধ করুন।’ তিনি আরো বলেন, ‘রেক্স টিলারসন ও আমি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, উগ্র মতাদর্শে অর্থায়ন না করতে কাতারকে বলার সময় এসেছে।’ ট্রাম্প বলেন, কাতারবিরোধী ঐক্যে সমর্থন দিতে চান তিনি।
কিন্তু ট্রাম্পের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন এর আগে বলেন, কাতারের ওপর অবরোধ মানবিক বিপর্যয়ের কারণ হয়ে উঠতে পারে। তিনি আরো বলেন, উত্তেজনা অব্যাহত থাকলে সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযানে আঞ্চলিক সহযোগিতায় প্রভাব পড়তে পারে। তিনি সংকট নিরসনের আহ্বান জানান।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিলারসনের এই দ্বিমুখী অবস্থান থেকে স্পষ্ট হচ্ছে, কাতার ইস্যু নিয়ে খেলছে যুক্তরাষ্ট্র। টিলারসন সংকট নিরসনের আহ্বান জানালেও তাতে কান না দিয়ে কাতারের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের শক্ত মন্তব্য নিয়ে মেতে আছে এই মুহূর্তে কাতারবিরোধী দেশগুলো।
কাতারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে অর্থায়নের অভিযোগ এনে সোমবার হঠাৎ করে দেশটির সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দেয় সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর ও বাহরাইন। কয়েকটি মিত্র দেশ তাদের সঙ্গে সুর মেলায়। কিন্তু কাতার তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সৌদি আরবসহ অন্যান্য দেশগুলো বলছে, কাতারকে তাদের নীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে এবং অঙ্গীকার করতে হবে, সন্ত্রাসে অর্থায়ন বন্ধ করবে তারা। ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা যাবে না। কিন্তু কাতার সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তারা আত্মসমর্পণ করবে না। এ অবস্থায় কাতার ইস্যুতে বড় খেলোয়াড় হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। মনে হচ্ছে, ট্রাম্প না চাইলে এ সমস্যার সমাধান হবে না।
এদিকে, কাতার নিয়ে কূটনৈতিক সংকট সমাধানে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল সংকট নিরসনের তাগিদ দিয়েছেন। দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু অস্ত্রধারী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তান কোনো পক্ষে না গিয়ে মধ্যপন্থা অবলম্বন করছে।