এই মৌসুমে বেড়ানোর কোনো জায়গা না পেলে একেবারে কম খরচে কোনোরকম ভিসা ছাড়াই ঘুরে আসতে পারেন হিমালয়ের কোল ঘেঁষা দেশ ভুটান থেকে। পৃথিবীর যে কয়েকটি দেশে যেতে এখনও কোনো ভিসার প্রয়োজন পড়ে না, তার মধ্যে ভুটান একটি।
তবে ভিসা না লাগলেও ভুটানে ঢুকতে আপনার এন্ট্রি পারমিটের প্রয়োজন পড়বে। এই পারমিটই আপনার ভিসার কাজ করবে। আপনি যদি বাই এয়ারে ভুটান যেতে চান তাহলে জেনে রাখা ভালো, ভুটানে নামার পরপরই আপনাকে যে অন এরাইভাল ভিসা দেওয়া হবে সেটি শুধুমাত্র থিম্পু, ফুয়েন্টশোলিং এবং পারো শহরের জন্যই প্রযোজ্য। অন্য শহরে যেতে চাইলে আবার সেই পারমিটের প্রয়োজন হবে।
আপনি বাংলাদেশি কিংবা ভারতীয় হলে ভুটানে প্রবেশ করতে আপনার কোনো টাকাই লাগবে না। তবে পশ্চিমা হলে প্রতিদিনের জন্য আপনাকে ২০০ ডলার ফি গুনতে হবে।
যেতেও যে খুব বেশি হ্যাপা, তা কিন্তু নয়। আকাশপথ ও সড়ক পথ, দুইভাবেই ভুটান যাওয়া যায়। আকাশপথে খরচটা একটু বেশি পড়লেও একেবারে কম সময়ে চলে যেতে পারবেন। ঢাকা থেকে ‘দ্রুকএয়ার’ নামে একটি এয়ারলাইনস কোম্পানির বিমান ভুটান যায়। খরচ ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার মতো লাগতে পারে।
সড়কপথে খরচটা একেবারেই কম। পথের ক্লান্তিকে বুড়ো আঙুল দেখাতে পারলে বাই রোডেই ভুটান যাওয়া আপনার জন্য লাভজনক হবে। এক্ষেত্রে ভারতের শিলিগুড়ি হয়ে ভূটানের ফুটসলিং থেকে থিম্পু যেতে হবে আপনাকে। এজন্য ভারতের ট্রানজিট ভিসার জন্য আগেই টোকেন নিয়ে রাখতে হবে। ঢাকার কমলাপুর থেকে শিলিগুড়ির সরাসরি বাস পাওয়া যায়। ভাড়া মাত্র ১৩০০ টাকা। এরপর সেখান থেকে ভুটান অল্প দূরত্বের পথ।
থাকার জন্য ফাইভ স্টার, থ্রি স্টার বা নরমাল সব ধরনের হোটেলই পাবেন। আগে থেকে বুকিং দিয়ে রাখা যায়। প্রতি রাতের জন্য ভাড়া নেবে ৮০০ থেকে এক হাজার রুপি।
ভুটানে দ্রব্যমূল্যের দাম অনেক বেশি রাখা হয়। তাই কিছু কেনার সময় সতর্ক থাকুন। সাধারণত বেশিরভাগ প্রোডাক্টই ইন্ডিয়া, থাইল্যান্ড, চায়না থেকে আনা। বাংলাদেশের প্রোডাক্টও আছে। তাই কেনাকাটা না করে শুধু ঘুরে বেড়ান।
ঘোরার জন্য ভুটান-ভারত সীমান্তের ফুয়েনশলিং, রাজধানী থিম্পু, সাবেক রাজধানী পুনাখা, এয়ারপোর্টের শহর পারো যেতে পারেন। এগুলো ভূটানের প্রধান আকর্ষণীয় স্থান। এছাড়া হাতে সময় থাকলে আরও কিছু এলাকা ঘুরা যেতে পারে। তবে তিনদিনেই ভুটান ঘুরে দেখার জন্য যথেষ্ট।
সবশেষে দুটো কথা। ভিসা না লাগলেও আপনার পাসপোর্ট আর অল্প কয়েকটা পাসপোর্ট সাইজ ছবি সাথে নিয়ে নেবেন। রাস্তায় বিভিন্ন কাজে বা অনুমতি নেয়ার সময় প্রয়োজন পড়বে। আর কয়েকজন মিলে গ্রুপ করে বেড়াতে গেলে সব কাজ সহজ হয়ে যাবে। ট্রান্সপোর্ট, হোটেল বুকিং আর খরচও কমে আসবে অনেকখানি। সর্বোচ্চ ৮ জনের গ্রুপ হলে বেস্ট। তো এবার বেড়িয়ে আসুন পাহাড়ের দেশ ভুটান।