পটুয়াখালীর বাউফলের বাঁশবাড়িয়া গ্রামের শাহজাহান হাওলাদার (৬৮)। সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত তিনি। বাউফল ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন।
অথচ তিনি নিজ এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেছেন ছয়টি হাফিজি মাদরাসা। কোরআনে হাফেজ বানিয়েছেন নিজের ছেলেমেয়েসহ পরিবারের অন্যদের। তাদের বিয়েও দিয়েছেন হাফেজদের সঙ্গে। সব মিলিয়ে পরিবারে এখন ৪৮ জন হাফেজ। বাড়ির ছোটরাও একই পথে হাঁটছে।
জানতে চাইলে শাহজাহান হাওলাদার জাগো নিউজকে বলেন, বাবা (নুর মোহাম্মদ হাওলাদার) ছিলেন ধর্মপ্রাণ মুসলমান। তিনি হজ করেছেন। হজ পালনরত অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন তিনি। বাবা হাফেজদের খুব ভালোবাসতেন।
এ কারণেই তিনি লক্ষ্য স্থির করেন, পরিবারের সবাইকে হাফেজি পড়াবেন। সেই সূত্রে আত্মীয়তাও করেছেন হাফেজদের সঙ্গে। তিনি নিজের ছয় ছেলে ও চার মেয়েকে হাফিজি পড়ান। ছেলেমেয়েদের বিয়েও দিয়েছেন হাফেজদের সঙ্গে। এরপর তার ইচ্ছা অনুযায়ী ছেলেমেয়েরাও তাদের সন্তানদের হাফিজি পড়িয়েছেন ও পড়াচ্ছেন।
শাহজাহান হাওলাদারের মেজ ছেলে হাফেজ মাওলানা নুর হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমিসহ বাবার ছয় ছেলে ও চার মেয়ের মধ্যে এক ছেলে ও এক মেয়ে সৌদি আরব থাকেন। বাকি সবাই ব্যবসার পাশাপাশি হাফিজি মাদরাসায় শিক্ষকতা ও মসজিদের খতিবের দায়িত্ব পালন করছি।’
ছয় ছেলের ২৮ সন্তান এবং চার মেয়ের ২৩ সন্তান। এরই মধ্যে ২৭ জন কোরআনে হাফেজ হয়েছে। বাকিরা হাফিজি পড়ছে। শাহজাহান হাওলাদার জানান, এলাকায় ছয়টি মাদরাসা করেছি। এর মধ্যে তিনটি ছেলেদের ও তিনটি মেয়েদের।
এছাড়া বরিশালের আলেকান্দা এলাকায় মেয়েদের জন্য নূর জাহান বেগম হাফিজি মাদরাসা ও ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে দারুল আখরাম নুরানী হাফিজি মাদরাসাও স্থাপন করেছেন তিনি।
ছেলেদের মাদরাসা পরিচালনা করেন তার ছেলেরা ও মেয়েদের মাদরাসা পরিচালনা করেন তার মেয়ে ও ছেলের স্ত্রীরা। আমার যা ছিল তার সব কিছু মাদরাসা স্থাপনে খরচ করি।
তারপরও মাদরাসার সব খরচ চালাতে পারি না। এজন্য সরকার যদি এতিম ছেলেমেয়েদের জন্য সহায়তা করত তাহলে ভালো হতো। ১২ নং বাউফল সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুহা. জসিম উদ্দিন খান জাগো নিউজকে বলেন, শাহজাহান হাওলাদারের পরিবারের সবাই ধার্মিক ও বিনয়ী। পরিবারের সবাইকে হাফেজ বানিয়ে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।