এক চীন নীতির প্রশ্নে একেবারে ইউটার্ন নিলেন সদ্য দায়িত্ব নেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনের ব্যাপারে আগের অবস্থানের সম্পূর্ণ বিপরীতে গিয়ে এবার জানালেন, তিনি এক চীন নীতিকে সমর্থন করবেন। হোয়াইট হাউসের বরাত দিয়ে পলিটিকো গতকাল শুক্রবার এ খবর দেয়।
খবরে বলা হয়, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার সময় ‘এক চীন’ নীতির প্রতি ওয়াশিংটনের সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন ট্রাম্প।
চীনের এ নীতির ব্যাপারে প্রশ্ন তোলায় বেইজিং বিক্ষুব্ধ হওয়ার পর উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টায় তিনি এ ফোন করেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ নীতির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন চীন-মার্কিন সম্পর্ক জোরালো করে।
চীনের এ নেতার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ‘এক চীন’ নীতির প্রতি ‘সম্মান’ জানানোর ব্যাপারে সম্মত হন। তিনি মেনে নেন যে, তাইওয়ান চীন থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো দেশ নয়।
হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট শির অনুরোধে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ‘এক চীন’ নীতির প্রতি সম্মান জানান। হোয়াইট হাউস জানায়, দুই নেতার মধ্যে টেলিফোন আলোচনা বেশ আন্তরিক ছিল। তারা পরবর্তী সময় বিভিন্ন সফলতা নিয়ে আরও আলোচনার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। এ সময় শি ট্রাম্পের মনোভঙ্গিকে স্বাগত জানান।
সরকারি সম্প্রচার কেন্দ্র সিসিটিভির খবরে বলা হয়, এক চীন নীতির ব্যাপারে দেওয়া আমেরিকান সরকারের প্রতিশ্রুতির ওপর ট্রাম্প গুরুত্ব দেওয়ায় শি জিনপিং তার প্রশংসা করেন। এক্ষেত্রে বলা হয় যে, এই এক চীন নীতি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের একটি রাজনৈতিক ভিত্তি।
বস্তুত তাইওয়ানকে অখ- চীনের অংশ মনে করার নীতিই ‘এক চীন’ নীতি। ১৯৭২ সালে চীনের চেয়ারম্যান মাও সে-তুং ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের মধ্যে ‘এক চীন’ নীতির প্রতি মার্কিন সমর্থনের ব্যাপারে ঐকমত্য হয়। ১৯৭৯ সাল থেকে তাইওয়ানের সঙ্গে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই যুক্তরাষ্ট্রের। এর পর থেকে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেননি। এত বছর ধরে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই নীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেননি একটিবারের জন্যও। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে বিতর্কের জন্ম দেন। পাশাপাশি একাধিকবার এক চীন নীতি না মানার ইঙ্গিত দেন। এবার তিনি সেখান থেকে কেবল সরেই এলেন না, বিপরীত অবস্থানে দাঁড়ালেন।